প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন,মাস্ক ব্যবহার করুন-কংজরী চৌধুরী

268

খাগড়াছড়িঃ-পাহাড় ঘেরা পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে করোনা সচেতনতায় লিফলেট বিতরণ ও প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সংবাদকর্মীসহ একঝাক তরুণ ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জেলা শহরের প্রবেশমুখ বঙ্গবন্ধু স্কোয়ারে করোনা সচেতনতায় লিফলেট বিতরণ এবং সবধরণের যানবাহণে জীবাণুনাশক ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি স্প্রে করা হচ্ছে। যাত্রীরাসহ শহরে প্রবেশ করা সকল জনসাধারণের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সকালে বঙ্গবন্ধু স্কোয়ার এলাকায় দিনব্যাপি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। তিনি তরুণদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে নিতে তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেছেন।
এসময় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুূরী, জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল চাকমা, পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলা মং চৌধুরী, সাংবাদিক শংকর চৌধুরী, বিপ্লব তালুকদার এবং সাংবাদিক অপু দত্তসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সেই সাথে সাবান-পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করা একান্ত প্রয়োজন। না হলে ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেন।
এসময় চেয়ারম্যান আরো বলেন, সুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ মিটার দূরে অবস্থান করতে হবে, অপরিচিত কাউকে অথবা প্রবাসী কোন ব্যক্তির সন্ধান পেলে দ্রুত যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে, বাজার এলাকা, বাসস্টেশনসহ যেসব স্থানে জনগণের আসা-যাওয়া বেশি হয় সেসব স্থানে এন্টিসেপটিক স্প্রে করার ওপর আমাদের সকলকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
উদ্যোক্তারা, খাগড়াছড়িতে করোনা ভাইরাস সচেতনতা ও প্রতিরোধ কমিটির নামে পরিচালিত এই কার্যক্রম পরিস্থিতি সহনীয় না হওয়া পর্যন্ত, শহরের প্রতিটি গ্রাম, মহল্লার অলিগলিতে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে নিতে জেলাবাসীর সহযোগীতা কামনা করেছেন।
সারাবিশ্বের ১৯৬টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। বাংলাদেশেও এর সংক্রমণ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তার মধ্যে মারা গেছেন ৪ জন।
উল্লেখ, খাগড়াছড়িতে বিদেশফেরত ১০০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হলেও এর মধ্যে থেকে ৪১ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এরা সবায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। যদিও খাগড়াছড়িতে বিদেশফেরতের সংখ্যা প্রায় ২৬৫জন। তবে বিদেশফেরতদের একটি অংশ হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে অবাধে বাহিরে ঘোরাফেরা করায় স্থানীয়দের মধ্যে শঙ্কা বিরাজ করছে।
খাগড়াছড়ির ডেপুটি সির্ভিল সার্জন ডা. মিটন চাকমা জানান, বিদেশ ফেরতের কোনো তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি স্থানীয়দের সচেতন হওয়ারও অনুরোধ জানান।
খাগড়াছড়িতে মোট ৮০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সদরে ৩০টি এবং অন্য উপজেলাগুলোতে ৫০টি। এদিকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস নিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর দায়ে গত শনিবার তিনজনকে আটক করা হয়েছে। রোববার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।