আগামীকাল ভোট গ্রহণঃ কে হচ্ছেন রাঙ্গামাটির ২৯৯নং আসনের এমপি?

86

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
প্রায় ১ মাসের প্রচার প্রচারনা শেষে আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। রাঙ্গামাটির সকল শ্রেণীর জরিপে রাঙ্গামাটিতে লড়াই হবে ত্রিমুখী। তাই কে হচ্ছে রাঙ্গামাটি আসনের এবারের এমপি। প্রচারণ প্রচারণা ও পাহাড়ী বাঙ্গাল সকল সম্প্রদায়ের সমর্থন নিয়ে এবারের নির্বাচনে এখনো পর্যন্ত এগিয়ে আছে আওয়ামীলীগ প্রার্থী পার্বত্য অঞ্চলের অবিসংবাদিত নেতা দীপংকর তালুকদার। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট সমর্থিত প্রার্থী ছড়ি প্রতীক নিয়ে অমর কুমার দে ও তার পাশেই রয়েছে তৃণমূল বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সোনালি আঁশ প্রতীক নিয়ে মো. মিজানুর রহমান। এবারের নির্বাচনে যদি কোন মিরাকেল না ঘটে তাহলে সচেতন মহল ও জনপ্রিয়তার উর্ধ্বে থেকে আবারো এমপি হচ্ছেন দীপংকর তালুকদার এমনটাই মনে করেন রঙ্গামাটির সাধারণ মানুষ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর রাঙ্গামাটির দশ উপজেলা ও দুই পৌরসভা নিয়ে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৪৭ হাজার ৪১৬ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৩৬ জন। আর রাঙ্গামাটির ১০টি উপজেলার মোট ২১৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৪টি উপজেলার দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় ১৮টি ‘হেলিসর্টি’ কেন্দ্র রয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলার ১০টি উপজেলায় ৫০টি ইউনিয়নে ২১৩টি ভোট কেন্দ্র ও ১০১৪টি বুথে ভোটাররা তাদের গণতান্ত্রিক ভোট প্রয়োগ করবে। আর এ ভোটারাই নির্বাচন করবে আগামী দিনে রাঙ্গামাটির এমপি। এই বিচারেও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে শুধু দীপংকর তালুকদারের নামই শোনা যাচ্ছে।
২০১৮ সালে জয়ের পর থেকে দীর্ঘ ৫ বছরের দীপংকর তালুকদার এক দিনের জন্যও রাঙ্গামাটির মাঠকে ছেড়ে যায়নি। সেই সুবাধে দীপংকর তালুকদারের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে রয়ে গেছে। রাঙ্গামাটি আসনে পাহাড়ী বাঙ্গালী সকল সম্প্রদায়ের ভোটে আওয়ামীলীগ প্রার্থীই জয়ী হবে বলে মনে করছেন এখানকার সাধারণ মানুষ।
এদিকে পাহাড়ের মানুষ শান্তির পক্ষে সকলেই অবস্থান করছে। এবারের নির্বাচনে ভোটারা পাহাড়ি-বাঙালি বিভেদ, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র, আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে খুনোখুনি ও রক্তপাত বন্ধে দীর্ঘদিন ধরে আওয়াজ তুলে আছে। সাধারণ পাহাড়ের সাধারণ পাহাড়ী জনগন মুখ খুলতে না পারলেও তাদের কথা বার্তায় ভোট বিপ্লব ঘটিয়ে অবৈধ অস্ত্রধারী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ভোট বিপ্লব ঘটাবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
সাধারণ মানুষ চায় একজন সৎ ও যোগ্য ও উন্নয়নের পক্ষে যিনি থাকবেন এমন নেতৃত্বকে। পাহাড়ী, বাঙ্গালী, সে যেই দলেরই হোক না কেন দল মত নির্বিশেষে সকল জনগনকে পক্ষে হয়তে এবারের অবিসংবাদিত নেতা দীপংকর তালুকদারের পক্ষেই ভোট বিপ্লব ঘটতে পারে।
আর এই আসনে বরাবরই আওয়ামীলীগের দখলে ছিলো মাঠ। ৫ বারের নির্বাচনে তিনবারই আওয়ামীলীগ জয় লাভ করে। এবার জয় লাভ করলে দীপংকর তালুকদার ৫ম বারের মতো রাঙ্গামাটি আসন থেকে জয় লাভ করবে। দীপংকর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর ’৯১ এ বিএনপি সরকার গঠন করলেও রাঙ্গামাটি আসনটি আওয়ামী লীগের হাতে চলে যায়। ’৯৬ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ ধরে রাখে আসনটি। এরপর ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতির সমর্থনে জয়লাভ করে। ২০০৮ সালে পূর্ণ জনসমর্থ নিয়ে বিপুল ভোটে আসনটি পুনরুদ্ধার করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু ২০১৪ সালে নির্বাচনে অনেকটা বিএনপির জনসমর্থ ও অবৈধ অস্ত্রের মুখে ৫৩টি কেন্দ্র দখল করে জেএসএস আওয়ামীলীগের জয় ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাঙ্গামাটি জেলার সচেতন ও অভিজ্ঞ মহল মনে করছে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগ এবার মাঠে নেমেছে কোমড় বেঁধে। দীপংকর তালুকদার ২০১৮ সালে জয়ের পর থেকে মাঠে ছিলো বলেই এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ফুরফুরে মেজাজে। দলীয় কোন্দল ও দ্বিধাবিভক্ত না থাকায় এবারের নির্বাচনে সকলে মাঠে নেমেছে নৌকার পালে হাওয়া লাগাতে।
অন্যদিকে এই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি হরতাল, অবরোধ করে ডামি নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে মাঠে রয়েছে। আর বিএনপি’র সাথে একই সুরে তাল মিলিয়েছেন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ (প্রসীত) গ্রুপ। তারা ভোট বর্জন করে ভোটারদের ভোট না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ফলে ভোট নিয়ে নানা আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেমে শেষ মুর্হুতে বিভিন্ন সমস্যা কথা তুলে ধরে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন আঞ্চলিক দল জনসংহতি সমিতির হেভিওয়েট নেতা ঊষাতন তালুকদার ও জাতীয় পার্টির হারুনুর রশিদ মাতব্বর।
তার পরও পার্বত্য অঞ্চলের জনগন চাই পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ফিরে আসুক, শান্তিপূর্ণ ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে একজন যোগ্য নেতৃত্ব উঠে আসবে পার্বত্য রাঙ্গামাটি আসনে। যে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে এবং পাহাড়ী বাঙ্গালী সকল সম্প্রদায়ের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করে এই জেলার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে।