রাঙ্গামাটি ঠেগামুখ স্থল বন্দর, রেলপথ ও বিমান বন্দর, চার লেইন সড়ক ও শান্তিচুক্তি পূর্ণবাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে-দীপংকর তালুকদার

130

॥ মিল্টন বাহাদুর ॥
পার্বত্য শান্তিচুক্তি পূর্ণবাস্তবায়ন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, ঠেগামুখ স্থল বন্দর স্থাপন করে ইমিগ্রেশন পয়েন্ট চালুর উদ্যোগ, রেলপথ ও বিমান বন্দর, জেলায় চার লেনের রাস্তা, বিশ্ব মানের পরিবেশ বান্ধব ইকো ট্যুরিজম অঞ্চল গঠন, সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সাস্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন, কর্ণফুলী হ্রদ ব্যবস্থাপনাসহ ২১টি নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন রাঙ্গামাটি ২৯৯নং আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী দীপংকর তালুকদার। তিনি বলেন, এই ইশতেহার শুধু নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য বা গতানুগতিক নিয়ম রক্ষার জন্য বা মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফাঁকা বুলি নয়। প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি সমূহ বাস্তবায়নে আমি অত্যন্ত আন্তরিক এবং সক্ষম বলেই এই ইশতেহারের মাধ্যমে আমার ভবিষ্যত কর্মসূচী ঘোষণা করেছি।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাঙ্গামাটি ২৯৯নং আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী দীপংকর তালুকদারের নির্বাচনী এই ইশতেহার ঘোষনা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ২১দফা নির্বাচনী ইশতেহারসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাঙ্গামাটি ২৯৯নং সংসদীয় আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী দীপংকর তালুকদার আরো বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর হতে অদ্যবধি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের শান্তি-সম্প্রীতি উন্নয়নের লক্ষ্যে আন্তরিক ভাবে কাজ করে আসছি। আপনারা নিশ্চয় জানেন যে, বিগত ১৫ বছর যাবত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শাসনামলে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাঙ্গামাটি জেলাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ শিক্ষা-স্বাস্থ্য, কৃষি বিদ্যুৎ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও যোগাযোগসহ নানা খাতে দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এবং সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট আছে।
আমার রাজনীতির একমাত্র লক্ষ্য রাঙ্গামাটি জেলাকে একটি সন্ত্রাসমুক্ত বৈষম্যমুক্ত, সম্প্রীতিবান্ধব, শান্তিপূর্ণ এবং উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট জেলায় রূপান্তরিত করা। এই লক্ষ্যে আত্মনিয়োগ করে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি এবং সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জননেত্রী শেখ হাসিনার আশীর্বাদ, অত্র জেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অনুপ্রেরণায় এবং জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থনের প্রত্যাশের ২৯৯ পার্বত্য রাঙ্গামাটি আসন থেকে সপ্তম বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হয়েছে। সকলের দোয়া আশীর্বাদ জনসমর্থন এবং জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে আগামী ৭ই জানুয়ারি ২০২৪ পুনরায় নির্বাচিত হলে আমার লক্ষ্য অভীষ্ট রেখে এই জেলাকে একটি সন্ত্রাসমুক্ত, শান্তি-সম্প্রীতি, উন্নত সমৃদ্ধ এবং স্মার্ট রাঙ্গামাটি বিনির্মাণে আমার চলমান আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তাই আমার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে আমি বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে আমার নির্বাচনী ইশতেহার/ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করেছি। কোন কোন বিষয়ে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব প্রকাশিত ইশতেহার/প্রতিশ্রুতিতে তার সুনিদিষ্টভাবে উল্লেখ করেছি।
তাই রাঙ্গামাটি জেলাকে নিয়ে আমার কাঙ্খিত স্বপ্ন সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাকে পঞ্চম বারের মতো জয়যুক্ত করার জন্য আপনাদের মাধ্যমে আমার প্রিয়রাঙ্গামাটিবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র মো: হাবিবুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক হাজী মো: মুছা মাতব্বর, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক এ কে এম মকছুদ আহমদ, আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অভয় প্রকাশ চাকমা, দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক হাবিবুর রহমান, প্রেস ক্লাব সভাপতি মো: সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারন সম্পাদক আনোয়ার আল হক, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান মহসিন রোমানসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
২১ দফা ইশতেহার মধ্যে রয়েছে, (১) পার্বত শান্তিচুক্তি পূর্ণবাস্তবায়ন, (২) পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, (৩) রেলপথ ও বিমান বন্দর, (৪) চার লেনের সড়ক পথ, (৫) পার্বত্য জেলাকে বিশ^মানের পর্যটন (ইকো ট্যুরিজম), (৬) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, (৭) রাঙ্গামাটিতে কৃষি কলেজ স্থাপন, (৮) ঠেগামুখ স্থল বন্দর (৯) রাঙ্গামাটি এক সুবিধাজনক জায়গায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন, (১০) রাঙ্গামাটি জেলা কারাগার ও খাদ্য গুদাম স্থানান্তর, (১১) দশ উপজেলায় অবকাঠামো উন্নয়ন ও আন্তঃ উপজেলা সড়ক যোগাযোগ, (১২) কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা, (১৩) কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য চাষের পরিকল্পনা গ্রহন, (১৪) রাঙ্গামাটিতে উৎপাদিত ফল সংরক্ষণে হিমাগার স্থাপন, (১৫) রাঙ্গামাটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিও ও জাতীয়করণ, (১৬) রাঙ্গামাটির সবকটি উপজেলাকে জাতীয় গ্রীড সঞ্চালন লাইন স্থাপন, (১৭) রাঙ্গামাটি জেলাকে শক্তিশালী নেটওয়ার্কের আওতায় আনা, (১৮) বনজ ও ফলজ বাগান ব্যবস্থাপনা, (১৯) প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে স্টেডিয়াম নির্মাণ ও উপজেলা সদরে একটি গফল মাঠ স্থাপন, (২০) স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং নিরাপদ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহন, (২১) নিরাপত্তার স্বার্থে রাঙ্গমাটি শহরসহ জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সিসি ক্যামরা স্থাপন।