রাঙ্গামাটিতে গুর্খা সম্প্রদায়ের ‘ভৈল-ঢেওসি’ উৎসব উদযাপিত

390

॥ নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
রাঙ্গামাটি পার্বত্য অঞ্চলের বসববাসরত নেপালের বংশদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায়ের দেওয়ালী পুজা (কালি পূজা) উপলক্ষ্যে ২দিন ব্যাপী ঐতিহবাহী ‘ভৈল-ঢেওসী’ উৎসব বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয়েছে।
দেওয়ালী পুজা (কালিপূজা)কে সামনে রেখে গেল রবিবার ও সোমবার দুইদিন ব্যাপী নেপালের বংশদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায় সুদীর্ঘকাল থেকে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এই উৎসব পালন করে আসছে। উৎসবের প্রথম দিনকে ‘ভৈল’ ও দ্বিতীয় দিনকে বলা হয় ‘ঢেওসি’। নেপালের বংশদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায়ের আবাল, বৃদ্ধা, বণিতারা সবাই এই উৎসবে মেতে উঠে দুইদিন আনন্দে উদ্বেল হয়ে পড়ে।
এই দুইদিন গুর্খা সম্প্রদায়ের আবাল বৃদ্ধা বণিতা সবাই কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে সন্ধ্যার পর পাড়ায় পাড়ায় মানুষের বাসা-বাড়িতে গিয়ে বাঁশের লাঠি হাতে মাটিতে ঠুকিয়ে সুরের তালে তালে কবিতার ছন্দে গান গেয়ে শুভেচ্ছা উপহার চাউল, টাকা, তরিতরকারী, বিশেষ পানীয় (পাহাড়ী মদ), সংগ্রহ করে থাকে। এই সময় নাচ-গানসহ ঘরে ঘরে মোমবাতির আলো জ্বালিয়ে ও রাতভর আনন্দে মেতে থাকে। এসময় অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষরাও তাদের সাথে মিলিত হয়ে আনন্দ উপভোগ করে। এসময় এক সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এই সমস্ত জিনিস সংগ্রহ করে পরবর্তীতে সবাই মিলে বনভোজনের আয়োজন করে থাকে। দ্বিতীয় দিনে ভাই টিকা দেয়া হয়। দধিতে চাউল মিশিয়ে ভাই বোন একে অপরকে তাজ পাড়িয়ে দেয়ার মধ্যদিয়ে শেষ হয় দুদিন ব্যাপী ঐতিহবাহী ‘ভৈল-ঢেওসী’ উৎসব।
রাঙ্গামাটি শহরের জেলা বোডস্থ কন্ট্রেটর পাড়া, মাঝেরবস্তি, আসামবস্তি ও গর্জনতলীসহ অন্যান্য পাড়া মহল্লায় নেপালের বংশদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায়ের মানুষ ‘ভৈল-ঢেওসি’ উৎসবে মেতে উঠতে দেখা যায়।
আর দেওয়ালী পূজা (কালি পূজা)’কে সামনে রেখে রাঙ্গামাটি জেলায় বসবাসকারী নেপালের বংশোদ্ভুত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গুর্খা সম্প্রদায়ের মানুষরা সুদীর্ঘকাল থেকে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এই ‘ভৈল-ঢেউসি’ উৎসব পালন করে আসছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গেজেটের এস, আর ও, নং-৭৮-আইন-২০১৯, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০(২০১০ সনের ২৩ নং আইন) এর ধারা ১৯ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার উক্ত আইনের তফসিলের পরিবর্তে নিম্মরূপ নতুন তফসিল প্রতিস্থাপন করে তফসিল ধারা ২(১) ও ধারা ১৯ দ্রষ্টব্যের ক্রমিক নং ৩০ এ গুর্খা সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করে।