দীর্ঘ ৩০ বছর পর লিচুবাগান ফেরীঘাটে নির্মিত হচ্ছে সেতু, একনেকের অনুমোদন

88

কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাইঃ-লিচুবাগান ফেরীঘাটের উপর দীর্ঘ ৩০ বছর পর সেতু নির্মিত হতে যাচ্ছে। এই ফেরীঘাটে একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য প্রাণের দাবী ছিল স্থানীয় জনগণের। অবশেষে সেই প্রাণের দাবী পুরণ হতে যাচ্ছে।
বুধবার (১ মার্চ) রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন, লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণ করার জন্য একনেকের অনুমোদন পাওয়া গেছে। এখন টেন্ডার প্রক্রিয়া করার পর সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণের খবর শোনার পর থেকে কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি জেলার সর্বস্তরের জনগণের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। এই খবরের পর থেকে এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। কেননা এতদিন, বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ও অনলাইনে অনেক লেখালেখি এবং অনেক দেন দরবারের পরও লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণ করার কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় নাই। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাবার পর থেকে মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে।
জানা গেছে, ৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৩ সালে লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তৎকালিন যোগাওযোগ মন্ত্রী অলি আহমদ লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণ করার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মিত না হয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলকে কর্ণফুলী নদীর উপর সেতু নির্মাণ করা হয়। এর পর থেকে লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণ করার জন্য আর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় নাই।
সাংসদ দীপংকর তালুকদার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈশিং লিচুবাগান ফেরীঘাটের উপর সেতু নির্মাণ করার জন্য বুধবার (১ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সেতু নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। এরপরই প্রধানমন্ত্রী লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেন।
এদিকে লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মিত হবে এমন খবর শোনার পর আনন্দ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, কাপ্তাই ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল সাব্বির আহমেদ, জেলা পরিষদের সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মফিজুল হক, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমন দে, চন্দ্রঘোনা থানার ওসি শফিউল আজম, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমাসহ সর্বস্তরের গন্যমান্য ব্যক্তি ও সাধারন জনগন। এসময় তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি ও সাংসদ দীপংকর তালুদকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেনন।
স্থানীয়রা বলেন, লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু না থাকায় লিচুবাগান এবং রাইখালীতে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হোত। এখানে সেতু নির্মিত হলে মানুষের ভোগাান্তি কমার পাশাপাশি তিন পার্বত্য জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হবে। পাশাপাশি কৃষি উন্নয়ন বাড়বে এবং মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র রাইখালীর প্রাক্তন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলতাফ হোসেন বলেন, লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মিত হলে পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে গবেষণার কাজেও গতি আসবে।