পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে বিরোধ মীমাংসার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে লিগ্যাল এইড অফিস

128

মো. সোহরাওয়ার্দী সাব্বিরঃ-লিগ্যাল এইড মানে গরীব মানুষকে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া এই ধারনার আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার লিগ্যাল এইড অফিস। লিগ্যাল এইড অফিস রাঙ্গামাটির গত ছয় মাসের (জানুয়ারি থেকে জুন) কাজের পরিসংখ্যান জানলে আপনার চোখ কপালে উঠবে। এই কাজে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ জনাব মোঃ জুনাইদ এর আন্তরিক প্রচেষ্টা এখন রাঙ্গামাটিসহ দেশের আইন অঙ্গনে আলোচিত।
গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি রাঙ্গামাটির লিগ্যাল এইড অফিসার হিসাবে যোগদান করে বাংলাদেশে ১ম বারের মত নালিশী জমিতে গিয়ে শত শত সরেজমিন মীমাংসা সভা ও হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগ শুনানির কার্যক্রম শুরু করলে তা ব্যাপক সাড়া পড়ে। এছাড়া, রাঙ্গামাটিতে কোনো দাতা সংস্থা বা এনজিও এর সহযোগিতা ব্যতীত তিনি সকল উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন, শিক্ষা প্রতিষ্টান, ধর্মীয় নেতা ও কারাগারে গনশুনানী করা শুরু করেন। যার ফলাফল ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হওয়া শুরু করেছে।
লিগ্যাল এইড অফিস রাঙ্গামাটির সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় মাসে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের মধ্যস্থতায় ৯৮টি বিরোধ মামলা করার পূর্বেই সফল মীমাংসা হয়েছে। যার মধ্যে দেওয়ানী ৩৩, ফৌজদারী ২৪, পারিবারিক ২২ এবং অন্যভাবে ১৯টি। এছাড়া আদালতে বিচারাধীন চারটি পুরনো মামলা এসময় মীমাংসা হয়েছে। মামলা না করেই টাকা আদায় হয়েছে প্রায় আটাশ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে বিরোধ নিস্পত্তির চেষ্টা করা হয়েছে ২৭৮টি।
দেশের দূর্গমতম জেলা হওয়া স্বত্তে ও ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে স্বশরীরে গিয়ে ৫টি উপজেলা এবং ১৪টি ইউনিয়ন কমিটি গঠন ও কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়া, জেলা কারাগারসহ সদর ও বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্টানে ৮টি গনশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি লিগ্যাল এইড এর সাথে সম্পৃক্ত বিজ্ঞ বিচারক, প্যানেল আইনজীবী ও আদালতের সহায়ক কর্মচারীদের নিয়ে সেমিনার ও প্রশিক্ষণ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত ছয়মাসে লিগ্যাল এইড রাঙ্গামাটির সরাসরি সেবা পেয়েছেন প্রায় ৩০০০ মানুষ।
যোগাযোগ করা হলে লিগ্যাল এইড অফিসার জনাব মোঃ জুনাইদ জানান- চলমান চরম কর্মচারী সংকট এর সমাধান হলে এই সেবা দ্বিগুন করা সম্ভব। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।