পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের অডিটোরিয়াম

104

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের অডিটোরিয়াম। সাংস্কৃতিক অডিটোরিয়াম নাকি পরিত্যক্ত ভবন তা দূর থেকে বোঝা যায় না। অডিটোরিয়ামের ভেতর ময়লা আবর্জনায় আর নড়বড়ে অবস্থায় ছাদের সিলিং। সিলিং ভেঙ্গে হেলে পড়েছে। পরিত্যক্ত এ অডিটোরিয়ামটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের চারপাশ ঝোপ-ঝাড়ে পরিপূর্ণ। কয়েকটি জাতি সম্প্রদায়ের নির্মিত ভাষ্কর্যগুলোও রং না করায় জং ধরেছে। সংস্কারের অভাবে এভাবে পড়ে আছে বছরের পর বছর। অডিটোরিয়ামের ছাদের বিভিন্ন স্থানে সিলিং ভেঙ্গে পড়েছে। হেলে পড়া সিলিং। অডিটোরিয়ামের টয়লেটের অবস্থাও নাজুক। অডিটোরিয়ামের ভেতর ও বাইরের দেয়ালে ধরেছে জং। ছাদের উপরের রদে ধরেছে মরিচা।
এদিকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় ভিডিও নির্মাণে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারলেও তা দৃশ্যমান নয় বলে মন্তব্য করেছেন, রাঙ্গামাটি জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক লতিত সি চাকমা। তিনি বলেন, ভারতের মিজোরামে চাকমা অটোনোমাস কাউন্সিল (সিএডিসি) যে পরিমাণে ভিডিও নির্মাণে স্পন্সর করে সে অনুযায়ী রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের কর্মকান্ড অত্যান্ত নাজুক অবস্থা। তিনি আরো বলেন, ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট হচ্ছে জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান। তাদের কাজই হচ্ছে জাতি ও জনস্বার্থ রক্ষা করা। কিন্তু তাদের মধ্যে যদি দুর্বল নেতৃত্ব ও দায়িত্বশীলতার হীনতা থাকে তাহলে সেসব রক্ষা কখনো সম্ভব নয়। অডিটোরিয়ামে যে কেউ ভাড়ায় অনুষ্ঠান করবে। সে অনুসারে প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুত হয়ে থাকতে হবে। পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হওয়া অত্যান্ত দূঃখজনক।
রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, অনেকদিন হলো সিলিং হেলে পড়ে আছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সংস্কারের কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। এতে করে দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। যতদ্রুত সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরী।
এবিষয়ে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রুনেল চাকমা বলেন, অডিটোরিয়ামটি ভেতরে কিছু কিছু জায়গায় সিলিং হেলে পড়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রনালয়ে সাথে কথা বলেছি। মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধানুযায়ী এ মাসের শেষের দিকে মন্ত্রী সচিব আসার কথা। তিনি আরো বলেন, অডিটোরিয়াম পরিত্যক্ত হওয়াতে একে সংস্কার করতে হবে, নয়তো একেবারে ভেঙে নতুন করে তুলতে হবে। তবে অডিটোরিয়ামটি পরিত্যক্ত ও খারাপ অবস্থা হওয়াতে এখন ভাড়া দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান রুনেল চাকমা।
তিনি আরো বলেন, বর্ষাকাল চলছে। তাই বৃষ্টির কারণে কয়েকটি জাতি সম্প্রদায়ের নির্মিত ভাষ্কর্যগুলো রং করা হচ্ছে না। বর্ষাকাল শেষ হলেই ইন্সটিটিউটের সব ভাষ্কর্যগুলো রং করা হবে।
রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সদস্য ও রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের আহ্বায়ক রেমলিয়ানা পাংখোয়া বলেন, ‘অডিটোরিয়ামটি ভেঙ্গে নতুন করে সেখানে ‘অফিস কাম মাল্টিফাংসনাল ভবন’ নির্মাণ করা হবে। সে কারণে অডিটোরিয়াম ভবনটি সংস্কার না করে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মন্ত্রনালয় থেকে সচিব আসার কথা। করোনার কারণে আসতে পারেনি। এখন আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হচ্ছে তাই কিছুদিনের মধ্যে মন্ত্রনালয় থেকে সচিব আসার কথা রয়েছে। তিনি এসে পরিদর্শন করার পর পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।