দীঘিনালায় বারি-১ মাল্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে

129

সোহেল রানা, দীঘিনালাঃ-খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় সাইট্রাস জাতীয় ফল বারি-১ মাল্টা চাষ আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। উপজেলায় কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা হর্টিকালচারের সহযোগিতায় সরকারি ও বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২শত১২ হেক্টর জায়গা বারি-১ মাল্টার আবাদ বেড়েছে। স্থানীয় ভাবে উৎপাদিক মালটার চাহিদা খেতে স্বাদেও সুসাধু ।
স্থানীয় বাজারের মাল্টা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি ধরে বিক্রিয় করেন চাষীরা। বারি-১ মাল্টা চিনার সহজ উপায় হচ্ছে মাল্টার নিচে পয়সা গোলক আকৃতির থাকে। বারি-১ মাল্টার শতভাগ স্বজাত নিশ্চয়তা পয়াসা আকৃতি দেখে চিনে থাকেন প্রান্তিক চাষীরা ও ক্রেতারা।
উপজেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর দেয়া তথ্যমতে লেবু জাতীয় ফসল সম্পসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ থেকে ২০১৮ সালে সরকারি সহায়তাধীন সুবিধা ভোগী ২শত৪০ জন প্রান্তিক কৃষক ও ব্যাক্তি উদ্যোগের সম্মলিত প্রচেষ্টায় উপজেলায় ৯৬ হেক্টর এবং ২০১৯ থেকে ২০২০ সালে সরকার কর্তৃক ৩শত জন প্রান্তিক কৃষক ও ব্যাক্তি উদ্যোগে ১১৬ হেক্টর জায়গায় মাল্টা বাগান গড়ে তোলা হয়েছিল।
উপজেলায় গত ৪ বছরে উঁচুপাহাড় ও পতিত জমিতে সাইট্রাস জাতীয় ফল বাগান গড়ে উঠার পূর্বে দেখা যায়নি। এক সময় লিচু আর আম বাগান করার প্রতি ঝুকছিল ছিলো পাহাড়ের প্রান্তিক চাষীরা। বর্তমানে পাল্টে গেছে উপজেলার ফল বাগান করার দৃশ্য, এদিকে আগ্রহ হারাচ্ছে লিচু উপাদানে। আম্ররুপালি আমের সাথে পাল্লাদিয়ে বেড়ে চলছে সাইট্রাস জাতীয় ফল বারি-১ মাল্টা চাষ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওঙ্কার বিশ্বাস বলেন, লেবু জাতীয় ফসল সম্পসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির প্রকল্পের আওতায় সরকারি ভাবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সরকারি বেসরকারি ভাবে ২শ১২ হেক্টর জায়গায় মাল্টা আবাদ হয়েছে। উপজেলায় ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ছোট বড় প্রকল্পের আওতায় ৫শ৪০ জন প্রান্তিক চাষীদের সরকারি সহায়তায় বারি-১ মাল্টা বাগান গড়েতে সার্বিক সহায়তা করা হয়েছে। চাষীদের উৎপাদিত মাল্টা স্থানীয় বাজারে বিক্রিয় করছে এবং পাইকাররা কিনে শহরের নিয়ে বিক্রি করছে।
উপজেলা ভৈরবামুখ নয়াপাড়া এলাকার মাল্টচাষী সুমঙ্গল চাকমা(৫৫) বলেন, ২০১৯ সালে উপজেলা হর্টিকালচা‘র সহযোগীতায় কৃষি জমিতে ২শ২০টি বারি-১ মাল্টা চারা রোপন করেছিলা। তিন বছর প্রায় অর্ধেক মাল্টা গাছে ফলন এসেছে। জমির উর্বরতার কারনে রাসায়নিক ও কীটনাশক তেমন দিতে হয় না, জৈব স্যার ব্যবহারে মাল্টার ফলন ভাল হয়। বারি-১ মাল্টা দেখতে যেমন ভাল, তেমনই খেতেও সুস্বাধু। গ্রাপ্টিং করা চারা থেকে পরিচর্যার মাধ্যমে ৩ বছরে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
উপজেলার তারা বুনিয়া এলাকার আরেক চাষী ললেন্দ্র কুমার চাকমা(৫০) জানান, উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আমার ৩০ শতাংশ জমিতে মাল্টার বাগান করার জন্য চারা, বিষ, কীটনাশক সহ যাবতীয় সহযোগিতা পেয়েছি। আমার মাল্টা বাগান থেকে গত কয়েকবছর ধরে বারি-১ মাল্টা বিক্রিয় করে থাকি। বারি-১ মাল্টা চাহিদা ভাল, বাসা থেকে ক্রেতারা এসে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ধরে কিনে নিয়ে যায়। বাজারে গিয়ে বিক্রিয়ের চিন্তা করতে হয় না।
উপজেলা হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তা উদ্ভিদ তত্ত্ববিদ মো: মাসুম ভুঁইয়া জানান, হর্টিকালচার সেন্টার থেকে সরকারি ভাবে চারা, বীজ ও অন্যান্য সহযোগীতা করা হয় চাষীদের। সাইট্রাস জাতীয় ফল বারি-১ মাল্টা ফলের স্বজাত এবং শতভাগ নিশ্চিয়তা দিয়ে চারা সংগ্রহ করা হয়। কৃষকরা বিভিন্ন বেসরকারি নার্সারি থেকে চারা এবং বীজ সংগ্রহ করে থাকে যার ফলে অনেক সময় চারা ও বীজের জাত ঠিক না থাকায় বড় ধরনের লোকসান গুনতে হয় কৃষকদের। এসময় তিনি বলেন উপজেলা হর্টিকালচার সেন্টার থেকে সরকারি ভাবে ন্যায্যমূল্যে চারা বিক্রিয় করা হয়।