দূর্গম বিলাইছড়িতে গর্ভবতী হাইরিক্স মাদারকে সন্তান জন্মদানে সেবা দিলো উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ

116

সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিলাইছড়িঃ-বিলাইছড়ি উপজেলা একটি দূর্গম উপজেলা। সদর কিংবা শহরের সঙ্গে সরাসরি কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালে মুমূর্ষ রোগীর জন্য নেই কোন এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থাও।
যেতে হলে বোটে করে কাপ্তাই হয়ে সেখান থেকে আবার গাড়িতে করে যেতে হয়। ঠিক তেমনি সদরের বেলায়ও একই কথা। তাই যাওয়ার পথে সময় যেমনি বেশি লাগে তেমনি ভাড়াও দিতে হয় বেশি। সেজন্য কান্ট্রি বোট দিয়ে রোগী নিয়ে আসা-যাওয়া খুবই বিপদজনক।
তাই সম্প্রতি উপজেলায় ১টি আধুনিক ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালু হওয়াতে জনবল ও অন্যান্য বিশেষ সুবিধা কম থাকলেও রয়েছে বেশ অভিজ্ঞতা ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য কর্মচারীদের। করোনা ও অন্যান্য সেবার পাশাপাশি গর্ভবতী মহিলাদেরও সেবা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
তেমনিভাবে শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭ঃ১৫ মিনিটে সময় নার্সের অশেষ প্রচেষ্টায় অপারেশন ছাড়া স্বাভাবিকভাবে পুত্র সন্তান জন্ম দিলো একজন হাই রিক্স মাদার।
দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সাব নার্স খালেদা ও মুক্তি বড়ুয়া জানান, হাইরিক্স হলেও পজিশন খুবই ভালো হওয়াতে নর্মাল ডেলিভারি করতে পেরেছি। নার্সের সাথে সহযোগী হিসেবে উপস্থিত ছিল, রতœা তঞ্চঙ্গ্যাসহ অন্যান্য বেশ কয়েকজন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তা ডা. রশ্মি চাকমা সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি ট্রেনিং-এ ছিলাম। তবে আমার স্বাস্থ্য বিভাগে সবাই নিয়মিত সেবাদানে তৎপর। কিন্তু হাসপাতালে জনবল কম। আইসিইউ ও অপারেশনের ব্যবস্থা এখনো চালু হয়নি। তারপরেও আমরা সকল রোগীকে নিয়মিত সেবা দিতে সদা প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, গর্ববতী মহিলাকে শেষবারে চেক-আপ করা হয়েছিল আগস্ট মাসে প্রথম দিকে রাঙ্গামাটি মাতৃমঙ্গল হাসপাতালে। সেখানে ডা. লেলিন চেকআপ করে তাকে হাইরিক্স মাদার হিসেবে রিপোর্ট দেন। সময়ে আগে হাসপাতাল শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শও দেন।
তাকে নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন তার পরিবার ও আত্মীয়রা। তবে হাই রিক্সা মাদার কথাটি তখন সন্তান সম্ভবাকে বলা হয়নি।
সে হিসেবে ঐ মহিলাকে উপজেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে, ডাক্তারদের পরামর্শে, নার্সদের অভিজ্ঞতায় স্বাভাবিকভাবে পুত্র সন্তান জন্ম নিল ঐ হাইরিক্স মা। যা চমক দেখালো উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
মহিলার নাম গোপাদেবী তঞ্চঙ্গ্যা। স্বামী:-অনুপম তঞ্চঙ্গ্যা। সদর ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের কুতুবদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে মা ও পুত্র সন্তান উভয়ে সুস্থ রয়েছেন। নবজাত শিশুটিসহ তার সবার বড় ২ মেয়ে ২ ছেলে মোট ৪ ছেলে-মেয়ের জননী হলো।
এইসব অপারেশন ছাড়া নজিরবিহীন সাফল্যে দেখে সবাই খুশি। তাই সন্তানের পরিবার পক্ষ থেকে ডাক্তার নার্স এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সবাই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।