রাঙ্গামাটির পর্যটন খাতে চরম বিপর্যয়ঃ শত কোটি টাকার লোকশান, ৫০ হাজারের অধিক শ্রমিক কর্মচারী বেকার

235

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-বিগত দেড় বছর যাবত করোনা মহামারির করাল গ্রাসে রাঙ্গামাটি পর্যটন শিল্প বর্তমানে চরম বিপর্যয়ের সম্মখিন। ২০২০ ইং সালের মার্চ মাস থেকে করোনার প্রাদুর্ভাবের ফলে কয়েক মাস ছাড়া দীর্ঘ দেড় বছর কাল ধরে রাঙ্গামাটির সকল সরকারী বেসকারী পর্যটন কেন্দ্র বন্দ রয়েছে। বন্দ রয়েছে হোটেল, মটেল, রিসোর্ট, যানবাহন, বোট ও লঞ্চ এছাড়া পর্যটন শিল্পের সাথে জরিত স্থানিয় টেক্সটাইল বাঁশ বেত চারু ও কারু শিল্প সামগ্রীর বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র। রাঙ্গামাটির পর্যটন নির্ভর অর্থনীতিতে নেমেছে চরম ধ্বস।
এই শিল্পের সাথে জরিত মালিক কর্মকর্তা, টুর গাইড, টুর অপরেটর শ্রমিক কর্মচারী বেকারের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারের অধিক। টুর এজেন্সির কার্যক্রম সমপূর্ন রুপে বন্দ রয়েছে। ঐতিয্য বাহি খাবারের হোটেল ও রেষ্টুরেন্টগুলো সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ রয়েছে। মোট কথা রাঙ্গামাটির পর্যটন শিল্পের বিপর্যয়ে দিশেহারা এখানকার ব্যবসা বানিজ্য। সরকারী পর্যটন কেন্দ্রগুলো টিকে থাকলেও বেসকারী পর্যটন কেন্দ্র গুলো নিশ্চিহ্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
রাঙ্গামাটির অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গুলো হচ্ছে পলওয়েল পর্যটন, ডিয়ার পার্ক ঝুলান্ত ব্রিজ, আরন্যক, পেদা টিং টিং, টুকটুক ইকোভেলেজ, নির্বান নগর বৌধ মন্দির, উপজাতিয় গ্রাম, সুবলং ঝর্ণা, পুরমন পাহাড়, ঘাগড়া ঝর্ণা, দেবতা ছড়ি ঝর্ণা, কাপ্তাই নেভি পর্যটন, কাপ্তাই জুম রেস্তোরা, প্রশান্তি তাবুর্নিবাস, বিলাইছড়ি ধুপপানি ঝর্ণা, ন কাটা ঝর্ণা, মুপ্পছড়া ঝর্ণা, বড়াদম, বেরাইন্না, তংঞ্চ্যাঙ্গা গ্রাম, গাংসাবারাং, মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি সৌধ, নানিয়া”র ব্রিজ, কাট্টলি বিল, সাজেক ভেলির রুইলুই পাড়া, কংলাক পাহাড়, ছোট্ট হরিনা সুয়াম ফরেষ্ট, ইত্যাদি।
রাঙ্গামাটির ঐতিহ্যবাহি খাবারের দোকান গুলোর মধ্য পাজন, পিবির ভাত ঘর, জুম ঘর, ত্যন্নবি, চাংপাং, মারমেইঢ, ইয়ারেং, কেবাং, অন্যপূন্না, গ্রিন ভেলি, কুটুম বারি, ভুজন বারি, হোটেল জামান, ইত্যাদির এই সমস্ত হোটেলে এক সময় পর্যটকদের ছিল প্রচন্ড ভীড়। এগুলোতে পাওয়া যেত খাবারের বিপুল সমাহার যেমন, ব্যাম্বো চিকেন, শাক শিদ্ধ, বাঁশকুরুল, পাজন, কলার মোর্চা ভত্তা, মুরগীর গুদাইয়া, চাপিলা ফ্রাই, কাচকি ফ্রাই, মাছ কেবাং, মরিচের গুদাইয়া, হাঁসের মাংস ইত্যাদি। বর্তমানে এই সমস্ত আনন্দ মুখর পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে বিরাজ করছে নিস্তব্ধ নিরবতা।
রাঙ্গামাটির অন্যতম ব্যবসায়ী ও গ্রীন ক্যাসেল এর মালিক মোঃ জাহেদ বলেন, অন্যান্য শিল্পের মতো স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োগ করে পর্যটন কেন্দ্র গুলো লকডাউনের পরে খুলে দেওয়া উচিৎ। পর্যটকদের নিয়ন্ত্রিত যাতায়াত করোনার কোন ঝুঁকি নেই। তিনি পর্যটন খাতে সরকারী প্রণোদনার সুষ্ট বন্টন ও বৃদ্ধি দাবি করেন।
রাঙ্গামাটি হোটেল স্কয়ার পার্ক এর স্বত্তাধিকারী মোঃ নেয়াজ আহমেদ বলেন, আমরা কোটি কোটি টাকা বিনিযোগ করেও বর্তমানে চরম ক্ষতির সম্মখিন সরকারী আইনের বেড়া জালে করোনাকালে আমরা পাঁচ শতাংশ হার সুদে ঋণ সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি পালন শত্তে লকডাউনের পর পরেই হোটেল মোটেল ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া জোর দাবি জানান।
রাঙ্গামাটি হিল ট্যুরিজম সার্ভিস এর ব্যবস্থাপক মোঃ গালিব হাসান বলেন, রাঙ্গামাটির টেক্সটাইল বাঁশ বেত ও কুটির শিল্প মৌসুমি ফল আম আনারস ইত্যাদি পর্যটক নির্ভর বর্তমানে পর্যটক না আসায় এ সমস্ত শিল্পে চরম দুর্দশা বিরাজ করছে।