অবৈধ দখলের কবলে ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাব ও দর্শনীয় কেরানী পাহাড়

365

শেখ ইমতিয়াজ কামাল ইমন, রাঙ্গামাটিঃ-দেশের সবচেয়ে বড় কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাই হ্রদের পাশেপাশে যে যেভাবে পারছে দখল করে নিচ্ছে। হ্রদের জায়গায় গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবনও। রাঙ্গামাটিতে এরকম অবৈধ স্থাপনা করা হচ্ছে পুলিশ লাইনস্থ খতিয়ানভুক্ত খাজনাকৃত ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের বন্দোবস্তি জায়গা কেরানী পাহাড় নামক স্থানে। কাপ্তাই হ্রদ দখল করে পৌরসভার সিঁড়ি ও ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের জায়গা দখল করে স্থাপনা তৈরী করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের একাংশ জায়গার পাশ দিয়ে কাপ্তাই লেকের পাড়ের এক মনোরম দর্শনীয় স্থান কেরানী পাহাড়। প্রতিদিন এই স্থানে প্রচুর সংখ্যক দর্শনার্থীদের আনাগোনা দেখা যায়। দর্শনার্থীরা এসে মনোরম পরিবেশে কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করে এবং ঘুরে বেড়ায়।
আর এই দর্শনীয় স্থানে লেকের পাড়ে মানুষের চলাচলের জন্য পৌরসভা থেকে একটি সিঁড়িও নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছিল কয়েক বছর আগে। আর এই পৌরসভার সিঁড়ি হ্রদে পানি বেশি থাকার কারণে স্রোতের ধাক্কায় ভেঙে যাওয়ার পর বর্তমানে স্থানীয় এক দখলদার আবদুল সালাম নামে এক লোক প্রশাসনকে না জানিয়ে ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের একাংশ জায়গা ও কাপ্তাই হ্রদ দখল করে খুবই সাহসীকতার সাথে স্থাপনা তৈরি করছেন। এতে করে প্রতিদিন বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। এতে করে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা এবং পাশে থাকা ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের পক্ষ থেকে খতিয়ানভুক্ত খাজনাকৃত ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের বন্দোবস্তি জায়গা দখর করার প্রসঙ্গে কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিলো। যার অভিযোগ নম্বর ৪৪৮, তাং-২৭/০৬/২০২১ইং। কিন্তু কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি কোতয়ালী থানা পুলিশ।
এব্যাপারে ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের সভাপতি সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অবৈধ দখলদার আবদুল সালাম নামে এক ব্যক্তি ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের জায়গা দখল করে অবৈধ ভাবে ঘর নির্মাণের কারণে পরিবেশের ক্ষতি সাধন করেছেন তিনি। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে এই জায়গা কোন ঘরবাড়ি ছিলো না। বর্তমানে আব্দুল সালাম যে জায়গা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছে তাও অবৈধ এবং বর্তমানে আমাদের ক্লাবের সামনের জায়গায় নতুন করে ঘর নির্মাণ করেছে তাও অবৈধ। তিনি যে জায়গায় ঘর নির্মাণ করেছে তা ক্লাবের সামনের অংশ পুরোটাই ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের।
তিনি আরো বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে মানুষের চলাচলের জন্য ইয়াং রাঙ্গামাটি ক্লাবের জায়গা কিছু অংশ ব্যবহার করা হয়েছে। পরবর্তীতে পৌর মেয়রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছিলেন পাশে যখন জায়গা কমে গেছে তা হলে সামনের দিকে এগুতে পারবেন। সাড়ে ১৭ ডিসিম্যাল জায়গা যতটুকু পড়বে পৌরসভার পক্ষ থেকে ক্লাবকে বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে বলেছিলেন পৌর মেয়র। আর আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি এই ক্লাবটিকে কিছু করার জন্য কিন্তু করোনার কারণে আর হয়ে উঠেনি। আর করোনার কারণে মানুষের আনাগোনা কমে যাওয়ায় ফাঁকে আব্দুল সালাম আমাদের জায়গায় ঘর তৈরীর সুযোগ গ্রহন করেছে। আর কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরও আইনানুগ কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করার কারণে আবারো তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোন সুরাহা এ পর্যন্ত গ্রহন করেনি কোতয়ালী থানা।
স্থানীয়রা বর্তমানে দাবী করছেন এতো সুন্দর দর্শনীয় স্থানটি যেন অবৈধ দখলের হাত থেকে রক্ষা পায়। তাই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি এই ব্যাপারে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।