লামায় ট্রাক-মাহিন্দ্র-মোটর সাইকেল ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত-৩, আহত-৪

197

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামাঃ-লামা উপজেলার লামা-চকরিয়া সড়কের মিরিঞ্জা পশ্চিম লাইনঝিরি এলাকায় ট্রাক, মাহিন্দ্র ও মোটর সাইকেল ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছে। রোববার (১১ জুলাই) দুপুর ১টা ৫মিনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা উদ্ধার কাজে অংশ নেয়।
নিহতরা হলেন, আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের সিরাজ কারবারী পাড়ার শুভ দাশ এর স্ত্রী রূপসী দাশ (২২), একই পাড়ার গোবিন্দ দে এর স্ত্রী চিনু দে (৩০) ও লোহাগাড়া উপজেলার মুক্তার মিয়া (৫০)।
আহতরা হলেন, ট্রাকের হেলপার কুমিল্লা জেলার সদর উপজেলার কালিয়াঝুঁড়ি ইউনিয়নের বড়পুকুর উত্তর পাঁড়ের ফেলু মিয়া সর্দ্দার এর ছেলে জাকের হোসেন (৫০), কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মোঃ শহিদুল্লাহ এর ছেলে মোঃ সাগর (২৫), আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের সিরাজ কারবারী পাড়ার শুভ দাশ এর মেয়ে অংকিতা দে (৩)। দুর্ঘটনায় ট্রাকের ড্রাইভার পায়ে গুরুতর আহত হলেও সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ায় তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।
প্রত্যেক্ষদর্শীরা জানান, আলীকদম থেকে আসা চকরিয়া গামী একটি মাহিন্দ্র লকডাউনের নিয়ম ভেঙ্গে যাত্রী বোঝাই করে যাওয়ার পথে লামা পৌরসভার লাইনঝিরি মোড়ের এক ট্রাফিক পুলিশ মাহিন্দ্রটিকে থামতে বলে। মাহিন্দ্রটি পালিয়ে যেতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশের অফিসার একটি মোটর সাইকেল নিয়ে মাহিন্দ্রটিকে ধাওয়া করে। পরে মিরিঞ্জা পাহাড়ের পশ্চিম লাইনঝিরি এলাকায় একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে মাহিন্দ্রটিকে গতিরোধ করে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। এসময় চকরিয়া হতে আসা আলীকদম গামী সিলেট বালু বোঝাই একটি ট্রাক (লাইসেন্স নং- চট্টমেট্রো-ট ১১-৮৬৮৯) মিরিঞ্জা পাহাড় নামার সময় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে পড়া মাহিন্দ্র ও মোটর সাইকেলটির উপর তুলে দেয়। ঘটনাস্থলে ১ পুরুষ মুক্তার মিয়া ও ১ নারী চিনু দে এর মৃত্যু হয়। মোটর সাইকেল ও মাহিন্দ্রটি ধুমড়ে মুছড়ে যায়।
লামা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রবিন বলেন, আহত ৪ জনকে লামা হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানে আহত রূপসী দাশের মৃত্যু হয়। বাকী আহতদের মধ্যে শিশু অংকিতা দে এর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। বাকীদের লামা হাসপাতালে ভর্তি দেয়া হয়।
৩ জন নিহত ও ৪ জন আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, শুনামাত্র ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত নিহতদের উদ্ধার করি। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকটি সরিয়ে রাস্তার যোগাযোগ সচল করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল, লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম ও লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ রিজওয়ানুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়।