লামায় অর্থের অভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম নুরানী মাদ্রাসা

418

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামাঃ-কোরআনের পাখিদের কলরবে মুখরিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “চেয়ারম্যান পাড়া ইমাম বোখারী (রাঃ) তাহফিজুল কোরআন নুরানী মাদ্রাসা”। ২০১৫ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে চেয়ারম্যান পাড়ায় স্থাপিত হয় এই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ১১৩ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী আর ৪ জন শিক্ষকদের সমন্বয়ে নিজস্ব অর্থায়নে চলছে মাদ্রাসাটি। মাদ্রাসার পার্শ্ববর্তী বাসিন্ধা খোরশেদ আলমের স্ত্রী মৃত মুক্তা বেগমের দানকৃত ১০ শতক জায়গায় উপর প্রতিষ্ঠানটি নির্মিত।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা আব্দুল কাদের বলেন, ‘জরাজীর্ণ ২টি টিনের ঘরে ৫টি কক্ষে গাদাগাদি করে বসে চলে শিক্ষা কার্যক্রম। টিনের ঘর হওয়ায় বেশ গরম। প্রয়োজন মাপিক বৈদ্যুতিক পাখা না থাকায় ভ্যাপসা গরমে কষ্ট পায় শিশুরা। আমাদের কোন সরকারি বেসরকারি অনুদান নেই। বৃষ্টি হলে টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে। জায়গা থাকলেও মাদ্রাসার ফান্ডে অর্থ না থাকায় মাঠ ও টয়লেট সংস্কার করা যাচ্ছেনা। এতে করে শিশুরা শারীরিক শিক্ষা কার্যক্রম সহ পয়নিস্কাশনে কষ্ট পাচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, শিশুদের মাসিক বেতন আমাদের একমাত্র আয়। প্রতিমাসে গড়ে শিক্ষার্থীদের থেকে বেতন বাবদ ১৩/১৪ হাজার টাকা উঠে। অনেক শিশু এতিম ও দরিদ্র হওয়ায় তাদের থেকে বেতন নেওয়া হয়না। মাদ্রাসার ৪ জন শিক্ষকের বেতন, বিদ্যুৎ-পানির বিল, শিক্ষা উপকরণ, মাদ্রাসা মেরামত ও শিশুদের নাস্তা সহ আমাদের প্রতিমাসে গড়ে ব্যয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা। শিক্ষকদের মাসিক বেতন ৩ হাজার ৫শত টাকা। তাও ৩/৪ মাসের বেতন বকেয়া। শিশুদের মাসিক বেতন প্লে ১৫০, নার্সারী ১৫০, ১ম শ্রেণী ২০০, ২য় শ্রেণী ২৫০ ও ৩য় শ্রেণী ৩শত টাকা। গরীব এলাকা হওয়ায় এগুলো দিতে তাদের কষ্ট হয়। বেতন বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। আমি দ্বীনদার মানুষকে কোরআনের এই প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখার জন্য এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি।
মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি বজলুর রহমান বলেন, ’মাদ্রাসাটি করার পর থেকে আমরা বেশ সাড়া পেয়েছি। প্রচুর ছেলে মেয়ে এখন মাদ্রাসায়। কক্ষ গুলো ছোট হওয়ায় ও জায়গা সংকুলন না হওয়ায় নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাচ্ছেনা। মাদ্রাসায় পড়ালেখার মান ভালো। শিক্ষকরা আন্তরিক। এত অল্প বেতনে কেউ চাকরি করেনা। তারা মাদ্রাসাটিকে ভালোবেসে কাজ করছে। একাডেমিক ভবনের বড়ই প্রয়োজন। আমি সরকার ও দানবীর লোকজনকে কোরআনের প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি’।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ রফিক বলেন, ‘মাঝে মধ্যে আমরা যতটুকু পারি সহায়তা করি। দেড় শতাধিক ছেলে-মেয়ে এখানে পড়ালেখা করে।’
মাদ্রাসাটি উন্নয়নে কাজ করা হবে, এমন মত প্রকাশ করে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল বলেন, ‘আমি মাদ্রাসাটি দেখতে যাবো। দেখি পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি মহোদয়ের সাথে কথা বলে কি করা যায়।’