বন বিভাগে স্মার্ট পেট্টোলিং বিষয়ে কাপ্তাইয়ে ৫ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসুচি উদ্বোধন

332

কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাইঃ-বন সুরক্ষায় বনে পেট্টোলিং এর বিকল্প নেই। কিন্তু বন রক্ষায় গতানুগতিক পেট্টোলিং এর দিন শেষ। এখন চলছে ডিজিটাল যুগ। এই যুগে মান্দাতা আমলের পেট্টোলিং বন রক্ষায় খুব বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেনা। তাই এখন প্রয়োজন ডিজিটাল ব্যবস্থায় বন রক্ষা। সেই জন্য পেট্টোলিং এর পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। আর এই প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখেই স্মার্ট পেট্টোলিং এর ব্যবস্থার কথা ভাবছে বন বিভাগ। বিশেষ করে যারা বন সুরক্ষায় মাঠে থেকে কাজ করেন তাদের নিয়েই স্মার্ট পেট্টোলিং করা প্রয়োজন। কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে স্মার্ট পেট্টোলিং বিষয়ক এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালা উদ্বোধন করা হয়েছে।
কাপ্তাইস্থ বন বিভাগের বনফুল রেষ্ট হাউজে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মার্ট পেট্টোলিং এর উদ্বোধন করেন রাঙ্গামাটি অঞ্চলের বন সংরক্ষক ছানাউল্যাহ পাটওয়ারী। পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও মোঃ রফিকুজ্জামান শাহ্র সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মসুচিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্রাফ আহমেদ রাসেল ও ঢাকা থেকে আগত চাইনিজ একাডেমী অব সাইন্স এর প্রধান প্রশিক্ষক ড. মোঃ নাছির উদ্দীন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সহকারি বন সংরক্ষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, এসএমসির সভাপতি মাকসুদুর রহমান বাবুল ও ফরেষ্টার মোঃ নজরুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহবুব উল আলম। বন বিভাগের বিট কর্মকর্ত ও সহকারী বিট কর্মকর্তারা স্মার্ট পেট্টোলিং এ অংশ নেন। ৫ দিন ব্যাপী আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ এই স্মার্ট পেট্টোলিং আগামী ১৯ জুন পর্যন্ত চলবে বলে আয়োজক সুত্রে জানা গেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি অঞ্চলের বন সংরক্ষক ছানাউল্যাহ পাটওয়ারী বলেন, বন সুরক্ষায় মান্দাতা আমলের পেট্টোলিং বাদ দিয়ে এখন স্মার্ট পেট্টোলিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। ইতিমধ্যে সুন্দরবনে এই স্মার্ট পেট্টোলিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সুন্দর বনে এখন স্মার্ট পেট্টোলিং ব্যবস্থা কার্যকর আছে। স্মার্ট পেট্টোলিং মূলত ডিজিটাল ব্যবস্থাই বলা চলে। বন কর্মীদের হাতে একটি মোবাইল থাকবে। এই মোবাইলের মাধ্যমে সমগ্র বনের চিত্র উঠে আসবে। স্মার্ট পেট্টোলিং এ অফিসে বসেও বনের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে। বনের কোথায় কি গাছ আছে, অবাঞ্চিত কে বনে ঢুকেছে, কোথায় কখন বনের গাছ কাটা হচ্ছে, বনের কোথায় কোন জীব জন্তু বিচরণ করছে সব কিছুই স্মার্ট পেট্টোলিং এর মাধ্যমে জানা যাবে।
তিনি বলেন বনরক্ষা করা এখন অত্যন্ত জরুরী। বর্তমান চলমান করনো পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে ছানাউল্লাহ পাটওয়ারী বলেন, অক্সিজেনের জন্য কোটি কোটি টাকার মালিকও মারা যাচ্ছেন। অথচ আমরা অনেকেই জানিনা যে ১টি গাছ প্রতিদিন ২০ লিটার অক্সেজেন সৃষ্টি করছে। তিনি কর্মশালায় অংশ গ্রহণকারীদের আন্তরিকতার সাথে স্মার্ট পেট্টোলিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার জন্য আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও মোঃ রফিকুজ্জামান শাহ্ বলেন, বন্য হাতিও বনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বনে নিরাপদে হাতি বিচরণের ক্ষেত্রও সৃষ্টি করে দিতে হবে। স্মার্ট পেট্টোলিং বিষয়ক প্রশিক্ষণে সকল বিষয়ে ধারণা ধারণা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।