রাজবন বিহারে ২দিন ব্যাপী ৪৬তম কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু

682

শাহ আলম, রাঙামাটি>> রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দানোৎসব আজ বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টায় পূণ্যবর্তী উপাসিকা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত নিয়মে পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে ২দিন ব্যাপী শুরু হচ্ছে বৌদ্ধদের এ মহাপুণ্যাযজ্ঞ ৪৬তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান।

এরপর সূত্রপাঠ করে বেইন ঘর উদ্বোধন করেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়।

রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের সূত্রে জানা গেছে, মহামতি গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার প্রধান সেবিকা মহাপুণ্যবতী বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে রাজবন বিহারে এবার ৪৬তম কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এই অনুষ্ঠান ঘিরে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে রাজবন বিহারের পুরো এলাকাসহ গোটা রাঙ্গামাটি শহর। উৎসবে যোগ দিতে রাজবন বিহারের বুধবার থেকে অগণিত পূণ্যার্থীর ঢল নেমেছে।

পূর্ণ্যময় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সড়ক ও নৌপথে তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন পাহাড়ী গ্রাম ও জনপদ থেকে হাজার হাজার সদ্ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষ সমবেত হচ্ছে। এছাড়া দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের আগমন ঘটছে। উৎসব ঘিরে রাজবন বিহার এলাকায় বসছে মেলা। ধর্মীয় কীর্তন, নাটক, চরকায় সুতা কাটা, বেইন বোনা, কল্পতরু শোভাযাত্রাসহ চলছে বর্ণাঢ্য নানা আয়োজন।

রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান জানান, রাঙ্গামাটি রাজ বন বিহারে কঠিন চীদর দান উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে সব প্রস্তুতি। উৎসবে বরাবরের মতো লাখো পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আজ বিকাল ৩টায় পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দু’দিনের আনুষ্ঠানিকতা। বিকাল ৩টায় চরকায় সুতা কাটার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর (বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ব্যবহার্য বস্ত্র) তৈরি করে দানীয় উৎসবের।

রাজবন বিহারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় চরকায় সুতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন বেইন বোনা ঘর।

বেইন টানা শুরু করে সুতায় লাঙানো, সুতা সিদ্ধ ও রং করা, সুতা টিয়ানো, সুতা শুকানো, সুতা তুম করা ও নলী ভরা, বেইন টানা শুরু করে বেইন বুনা পরদিন সকাল ৬টায় পর্যন্ত এবং দুপুরে কঠিন চীবর উৎসর্গ ও দান করা হবে।