পার্বত্য চট্টগ্রামে আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবেনা – দীপংকর তালুকদার এমপি

706

নিজস্ব প্রতিবেদক,রাঙ্গামাটি : পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তণ প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এমপি বলেছেন, সারা পৃথিবীতে মেডিকেল কলেজ চাই,ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ চাই,বিশ^বিদ্যালয় চাই এজন্য আন্দোলন হয় । আর রাঙ্গামাটিতে হয়েছে ঠিক উল্টো। রাঙ্গামাটিতে মেডিকেল কলেজ চাইনা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় চাইনা এজন্য আন্দোলন করেছে একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল। এজন্য তারা শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে রাজপথে অপরাজনীতি করে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। যা অত্যন্ত লজ্জাজনক।

দীপংকর তালুকদার বলেন, আমরা যে কোন রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক অধিকার আমরা স্বীকার করি, প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল তার রাজনীতি করবেই, কেউ বাধা দেবেনা, কিন্তু রাজনীতির নামে নৈরাজ্য, রাজনীতির অরাজকতা,ধনসম্পত্তি নষ্ট,খুন, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী এগুলো যদি করা হয় তা আমরা মানবনা।

 

গত সোমাবার চিৎমরম ইউনিয়ন যুবলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক লাসিও মারমা তাকে হত্যা করা হয়েছে এবং তার স্ত্রীকে একই সঙ্গে হত্যা করা হয়েছে। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন ঐ এলাকায় কোন রাজনৈতিক দলের লোকজন অবৈধ অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছে।আমরা যখনই অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলি,অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করি তখন আমরা বলি শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে এই অবৈধ অস্ত্র।

এতদিন জনগনকে সাথে নিয়ে অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা যে আন্দোলন করেছি তার প্রেক্ষিতে প্রশাসন এ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য কাজ করছে এবং অবৈধ অস্ত্রধারীদের যখন আটক করছে তখন কোন কোন সংগঠন বলে তাদের নেতাকর্মীদের নাকি বর্তমান সরকার আটক করছে। এটা অত্যন্ত লজ্জার বিষয। যারা সুষ্টুভাবে রাজনীতি করছে প্রশাসন তাদের আটক করছে না কারন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সুষ্টু ধারার রাজনীতিকে পছন্দ করেন।
কিন্তু যারা পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্ত্রের রাজনীতি করছেন, আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের হত্যা করছেন, আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহ্ন করতে যারা ষড়যন্ত্র করছেন তাদের এ ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবেনা।

মঙ্গলবার বিকেলে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র ণৃ-তাত্বিক জনগোষ্টির ইনষ্টিটিউটে জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার এমপি এসব কথা বলেন।

রাঙ্গামাটি জেলা যুবলীগের সভাপতি ও পৌরসভা মেয়র মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক প্রকাশ চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি ড. প্রফেসর প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা,রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, সাবেক মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু,রাঙ্গামাটি সরকারী বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রফেসর মঈনুদ্দীন, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নূর মোহাম্মদ কাজল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন প্রমূখ।

দীপংকর তালুকদার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কিছু রাজনৈতিক দল আছে যারা সবসময় এদেশের মানুষগুলোকে বলার চেষ্টা করে যে বাংলাদেশ আমাদেরকে ভালবাসেনা,বাংলাদেশ আমাদের উন্নয়ন চায়না, বাংলাদেশ আমরা বিকশিত হই এটা চায়না। তারা সবসময় পার্বত্য চট্টগ্রামে আলাদা অস্তিত্ব, আলাদাভাবে বিচ্ছিন্নভাবে চিন্তা করার প্রবনতা তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়।
আজ তাদের মুখ শুকিয়ে গেছে কারণ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে,বাংলাদেশে আজ ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে, সবকিছু মিলিয়ে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ ও বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে তারা সুবিধা পাচ্ছে। এ কারনে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ আওয়ামীলীগকে আস্থা ও বিশ^াসের দল হিসেবে বেছেঁ নিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যান্য সমতল জেলার মত সমান তালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলেছে।

তিনি বলেন, নিজের স্বার্থে অনেকগুলো বিষয় যেগুলো আমাদের জাতি হিসেবে দ্বিধাবিভক্ত করছে, আমাদের জাতি হিসেবে দুরে ঠেলে দিচ্ছে, আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে তার মধ্যে একটি হলো সাম্প্রদায়িকতা। এটা এখন প্রতিবেশী দেশসহ বিভিন্ন দেশে পরিলক্ষিত হচ্ছে।

আর পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা যারা জাতীয় রাজনীতি করি, উপজাতীয়রা জাতীয় রাজনীতি করলে বলা হয় এরা সবগুলো বাঙ্গালীর দালাল হয়ে গেছে, আর বাঙ্গালীরা যারা আওয়ামীলীগ করে জাতীয় রাজনীতি করে তাদের বলা হয় শুয়োর খাওয়া মুসলমান।
কিন্তু আমরা যারা আওয়ামীলীগ করি তারা সাধারন মানুষের কথা বলি মানবপ্রেমের কথা বলি মানুষের জয়গান গাই।আমরা যারা আওয়ামীলীগ করি তাদের মধ্যে কোন জাতীগত ভেদাভেদ নেই আমরা সবাই মানুষ হিসেবেই সকলকে মূল্যায়ন করি। বাংলাদেশ আজ সাম্প্রায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল, এজন্য সবাইকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করতে হবে।

আলোচনাসভা শেষে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দীপংকর তালুকদারকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ও সংবর্ধিত অতিথিকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়।