ইউএনডিপির ২১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবী

1200

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটি – তিন পার্বত্য জেলায় ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফ’র প্রকল্পের সহায়তায় স্থাপিত ২১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলেও বিদ্যালয়গুলোর ৮৪০জন শিক্ষকপদর চাকুরী জাতীয় করণের গেজেট প্রকাশ করার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে কর্মরত তিন পার্বত্য জেলার শিক্ষকবৃন্দ।

শনিবার (৮ জুন) দুপুরে রাঙ্গামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ইউএনডিপি-সিএইচটিডিবি’র পরিচালিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমন্বয় কমিটি এই সংবাদ সম্মেলন করে।

তিন পার্বত্য জেলার ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফ পরিচালিত ২১০ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমন্বয় কমিটির আহবায়ক ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার জামুছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অরুণ কুমার তঞ্চঙ্গ্যা। এ সময় কমিটির সদস্য সচিব ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার আলুটিলা পুনর্বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশান্ত ত্রিপুরা এবং সদস্য বান্দরবান পার্বত্য জেলার রুমা উপজেলার চংলকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক উচহাই মার্মা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার রাজস্থলী উপজেলার ছাবোছড়া ভাত খাইছাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুতিল কুমার তঞ্চঙ্গ্যা ও একই উপজেলার খ্যাংদয়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামল বিশ্বাসসহ শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন বক্তারা বলেন, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন সুবিধা সহায়তা ও মৌলিক শিক্ষাদান (সিএইচটিডিএফ) প্রকল্পের আওতায় ২০০৮ সালে ওই ২১০ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে- রাঙ্গামাটিতে ৮১, খাগড়াছড়িতে ৪৯ ও বান্দরবানে ৮০টি। প্রকল্পের অধীন শিক্ষকদের স্বল্প বেতন-ভাতাসহ বিদ্যালয়গুলো পরিচালনা করা হয় ২০০৯ সাল থেকে ২০০১৪ সাল পর্যন্ত। এরপর প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে বেতন-ভাতা ছাড়াই চাকরি করে আসছেন, ওইসব বিদ্যালয়ের ৮৪০ শিক্ষক। এরই মধ্যে ২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ওই ২১০ বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে সরকার। কিন্তু শিক্ষকদের চাকরি নিয়ে আজ পর্যন্ত জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন ঘোষণা করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার কারণে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের সহায়তায় প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় স্থাপিত এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য শিক্ষকরা গভীর কৃতজ্ঞ। কিন্তু তাদের চাকরি জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন ঘোষণা না হওয়ায় আজও বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না তারা। ফলে চরম মানবেতর জীবন পার করে চাকরি করতে হচ্ছে তাদেরকে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত শিক্ষকরা বলেন, আমরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নিজ বিদ্যালয়ে পাঠদানসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি। জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করছি। আমরা এতটা দিন নিজেদের চাকরি জাতীয়করণের অপেক্ষায় আছি। কিন্তু বিদ্যালয় জাতীয়করণের প্রায় দুই বছর অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও আমাদের চাকরি সরকারিভাবে জাতীয়করণ হয়নি। তাই বিষয়টি মানবিক বিবেচনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করেন নেতৃবৃন্দ।