লেখাপড়ার পাশাপাশি বস্ত্রের কারুকাজ করছে স্কুল শিক্ষার্থী দেব রানী চাকমা, প্রশাসনের সহায়তা কামনা

1313

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটি – ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। ইচ্ছায় সবকিছু পারে বলে মন্তব্য করেছেন স্কুল শিক্ষার্থী দেব রানী চাকমা। দেব রানী চাকমার বাড়ি হলো বরকল উপজেলার ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়নের রদংহাবা নামক একটি ছোট্ট গ্রামে। লেখাপড়ার পাশাপাশি বস্ত্রের কারুকাজ করে সংসারের খরচ মেটাচ্ছে দেব রানীর পরিবার। সরকারী সহযোগীতা পেলে দেব রানীর পরিবারের উপকারের পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীল হতে পারে মেধাবী ছাত্রী দেব রানী।

ঐ গ্রামটি যেমনি দূর্গম তেমনি পশ্চাৎপদও বটে। আর সেই দূর্গম এলাকার প্রতিভাবান নারী হলেন দেব রানী চাকমা। বর্তমানে সে বরকল মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। বয়স চৌদ্দ। তার ক্লাস রোল ৩ (তিন)। তার পিতার নাম মেয়ে ধন চাকমা, মাতা সীতা চাকমা। কৃষি কাজ হচ্ছে মেয়ে ধনের একমাত্র উৎস। তার সামান্য রোজগারে বাঁচা মরা করে জীবন সংসার চলে। তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছয় জন।তার মধ্যে মেয়ে সন্তান হলো চার জন। চার মেয়ের মধ্যে দেব রানী চাকমা তিন নম্বরে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরকলের চাইল্যাতলী এলাকায় দুই বোনে বাসা ভাড়া করে থাকেন। দেব রানী চাকমা লেখাপড়ায় যেমনি ভালো তেমনি সৃজনশীলতার দক্ষতাও রয়েছে। গত ২০১৬ সালে সে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়ছে। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিধেয় বস্ত্রের কারুকার্য করেন। বস্ত্রের কারুকাজ করে যে আয় হয় তা দিয়ে সংসারে সহায়তা করে দেব রানী।

হাতে কলমে কাগজের উপর বিভিন্ন ধরনের নকশার মধ্যে পরিধেয় বস্ত্রের ছবি আঁকেন। বলতে গেলে একরকম ডিজাইনার। তার আঁকা ডিজাইনের ছবি দেখে তাঁর সহপাঠিরা ছয় সাতটি পরিধেয় বস্ত্র সেলাই করেছে বলে জানান দেব রানী চাকমা।

দেব রানী চাকমাকে কখন কোথায় এবং কিভাবে এই হাতের কাজটি শিখেছে প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে আমার এই ডিজাইনের কাজটা শিখা হয় এবং ছবি আঁকা আমার খুব পছন্দ। তাই শখ করে ছবি আঁকতে আঁকতে ডিজাইনের কাজটি শিখে ফেলি।

এই কাজে আগ্রহ এবং অনুভূতি কেমন প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন, আমার আগ্রহ অনেক। ডিজাইনের কাজটি কারো কাছ থেকে শেখা হয়নি। আমার প্রতিভা আমাকে আগ্রহী করে তুলছে। আমার ডিজাইন করা আঁকা ছবি দেখে কোন সহপাঠি বা বড় জন কেউ যদি বলে বাহ্ ছবির ডিজাইনটা খুব সুন্দর হয়েছে তখন আমার মনে আরো দ্বিগুণ আগ্রহ বেড়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, আমার স্বপ্ন হলো ভবিষ্যতে বড় নার্স হওয়া। পাশাপাশি তার সৃজনশীল দক্ষতায় কারোর সহযোগিতা পেলে অনেক দূর এগিয়ে যাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।