রাঙ্গামাটিতে দীপংকরই আওয়ামীলীগের ভরসা

547

নিজস্ব প্রতিবেদক – সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাঙ্গামাটি ২৯৯ নং আসনে আওয়ামীলীগের চুড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার। কেন্দ্র থেকে রাঙ্গামাটি আসনের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর।

রবিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত চিঠিতে দীপংকর তালুকদারের মনোনয়নের বিষয় সংক্রান্ত চিঠিটি পোষ্ট করেন জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীদের মাঝে চিঠি বিতরণ শুরু করা হয়। রবিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় আওয়ামীলীগের মনোনয়নপ্রাপ্তদের নামের তালিকা গনমাধ্যমের মাধ্যমে সকলে জানতে পারলেও রাঙ্গামাটি আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর নাম না আসায় অনেকটা টেনশনের মধ্যে ছিলেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যার পর রাঙ্গামাটি আসনে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী দীপংকর তালুকদারের নাম গনমাধ্যমে আসলে এবং এ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। রাঙ্গামাটিতে দীপংকরের মনোনয়নে শহরে আনন্দ মিছিল করে নেতাকর্মীরা।

রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার ১৯৯১ সাল থেকে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আসছেন। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দীপংকর তালুকদার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সমর্থিত প্রার্থী ঊষাতন তালুকদারের কাছে পরাজিত হলে ও দলকে শক্তিশালী করতে তিনি আওয়ামীলীগের দলীয় কর্মকান্ডে সবসময় উপস্থিত থেকে আওয়ামীলীগকে রাঙ্গামাটিতে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে এসেছেন বলে জানান আওয়ামীলীগের তৃণমুলের নেতা কর্মীরা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পরাজিত হলেও তিনি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তদারকি ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

দীপংকর তালুকদার পাঁচবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনবার বিজয়ী হয়েছেন। ১৯৯১ সালে প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন তিনি। পরেরবার ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি পার্বত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন এবং ২০০৮ সালে আবারো বিজয়ী হয়ে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মুছা মাতব্বর বলেন, দীপংকর তালুকদার আমাদের একক প্রার্থী। তার কোনো বিকল্প নেই, প্রয়োজনও নেই, দীপংকর তালুকদারই আওয়ামীলীগের একমাত্র আস্থা ও ভরসা বলে জানান তিনি।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে দীপংকর তালুকদার বলেন, ২০১৪ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে রাঙ্গামাটির ২০১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৩টি কেন্দ্রে জনসংহতি সমিতি অস্ত্রের মুখে জোর করে ৯৬ থেকে ৯৯ শতাংশ ভোট নিয়েছে। বাকি ১৪৮টি কেন্দ্রে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। কিন্তু এই ৫৩টি কেন্দ্রের ‘ভোট ডাকাতি’ ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করে দিয়েছে। নির্বাচিত ঊষাতন তালুকদার গত পাঁচ বছরে একটি ইটও স্থাপন করতে পারেনি কোথাও। বিপরীতে আমি সেই নির্বাচনে পরাজয়ের পরও জনগণের পাশেই ছিলাম, আছি এবং থাকব। আগামী নির্বাচনে জনগন কেন্দ্র পাহাড়া দিয়ে তাদের নেতা নির্বাচন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দীপংকর তালুকদার।

এদিকে রাঙ্গামাটি আসনে আওয়ামীলীগের পরীক্ষিত নেতা দীপংকর তালুকদারকে মনোনয়ন প্রদান করায় রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।