পাহাড় কেটে পরিবেশ বিপর্যয় চলছে ঘুমধুমে

185

নাইক্ষ্যংছড়িঃ-সরকারি জায়গায় প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের আজুখাইয়া মগঘাটা এলাকায় চলছে পাহাড়ার কাটা এবং অবৈধ ভাবে ড্রেজার মিশিন দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে বালি। একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রাকৃতিক বন ও পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে চলছে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন প্রাকৃতিপ্রেমীরা।
শনিবার (৭ মার্চ) দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের আজুখাইয়া গ্রামের মগঘাটা এলাকার স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ উঠেছে, বিশালকৃতির পাহাড়কে কেটে কেটে বিনষ্ট এবং ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি উঠিয়ে বালির মাহাল করা হয়েছে। এর ফলে বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক নিরাপত্তা। অতি বৃষ্টিতে এ পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী অংশগুলোর ধসে পড়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিন গিয়ে স্থানিয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ২৭১ নং এবং তুমব্রু মৌজার ১৬৭১,১৬৪৫ ও ১৬৪৩ নং দাগের আন্দরে আলহাজ্ব ইয়াহিয়া নামের ২০ একর লিজ প্লট রয়েছে। উক্ত প্লটের সৃজিত বাগানে বিশাল পাহাড় ধ্বংস করে ড্রেজার মিশিন বসিয়ে ১০/২০জন শ্রমিক দিয়ে রাতেদিনে বালি উত্তোলন করে যাচ্ছে স্থানিয় প্রভাশালী ফরিদুল আলম (৫০), আব্দু রহমান (৫৫)সহ বেশ কয়েকজন চিহ্নিত পরিবেশ ধ্বংসকারি। এদের নির্দেশে প্রতিদিন ৩/৪টি ডাম্পার (গাড়ী) ভর্তি মাটি ও বালি সরকারের উন্নয়ন কাজের নাম ভেঙ্গে যাচ্ছে ইটভাটায়।
সংরক্ষিত ইউপি মহিলা মেম্বার ফাতেমা বেগম জানান, মগঘাটা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কথিপয় লোকজন পাহাড়, টিলা কেটে গাছপালা উজার করে এবং মেশিন বসিয়ে রাতদিন বালি উঠিয়ে পাহাড়ের সবুজ প্রাকৃতিকে এভাবে ধ্বংস করা হলে ঘুমধুম সীমান্তে গাছ-গাছালির সৌন্দর্য আর থাকবে না। এখন পাহাড় কাটা বিষয়টি প্রভাবশালীর একটি সেন্ডিকেট জড়িত থাকায় কেহ ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মূখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
স্থানীয় কেয়ারটেকার সাধন বড়ুয়া বলেন, এখানে প্রায় দুই মাস ধরে কোদাল দিয়ে পাহাড়ের মাটি কেটে একটি মেশিন বসিয়ে বালি উঠিয়ে মজুদ করেন ফরিদুল আলম ও আব্দু রহমানের নেতৃত্বে কিছু অসাধু ব্যাক্তি পাহাড় ধ্বংসে মেতে উঠেছে। সৃজিত প্লটে কেয়ারটেকার হিসেবে আমি পরিবেশ ধ্বংস হতে দেখে পাহাড় কাটা ও বালি উঠানোর কাজে বাঁধা দিলে তারা আমাকে উল্ঠো মামলা দেওয়ার হুমখি দিয়েছে। আমি এখন হুমখি-দমখির কারনে ভয়ে এবং আতঙ্কের মধ্যে আছি। নির্বিচারে বালি উঠানো বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরেরর সহকারি পরিচালক একেএম শামীমুল আলম খুরশি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ব্যতিত কেউ পাহাড় কেটে বালি উত্তোলন করে থাকলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনা স্থলে দ্রুত অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানিয় এক নেতা বলেন, যে জায়গাতে পাহাড় কাটা ও বালি উঠানো হয়চ্ছে এটি সরকার থেকে লিজ নিয়ে সৃজিত বাগান করে দীর্ঘদিন ভোগদখলের সূত্রে এ ঘুমধুম এবং তুমব্রু মৌজার কিছু ভোগদখলকারী মানুষ আইনের ফাঁকফোকরে সরকারি জায়গাতে ভূয়া কাগজপত্র বানিয়ে নিজের জায়গা বলে দাবী করে পরিবেশ বিপর্যয় চলিয়ে যাচ্ছে অসাধু এক সেন্ডিকেট। আসলে এগুলো সবই অবৈধ।