॥ মোঃ আজগর আলী খান, রাজস্থলী ॥
রাঙ্গামাটির রাজস্থলীতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে চলছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। উপজেলার চারটি পূজামণ্ডপে চলছে দেবী দুর্গার আরাধনা। ভক্ত-দর্শনার্থীদের ঢল, ঢাক-ঢোলের তালে তালে আর বর্ণিল সাজসজ্জায় এ উৎসব ইতিমধ্যেই রঙে, আলোয় ও আনন্দে ভরপুর হয়ে উঠেছে।
রাজস্থলী হরি মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক শিমুল দাশ জানান, এ বছর আগের তুলনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক জোরদার করা হয়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিচ্ছেন এবং সমাপনী পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে নয়টা থেকে শুরু হওয়া মূল পূজা কার্যক্রম চলবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত।রাজস্থলী বাজার ও বাঙ্গালহালিয়া এলাকার মন্দিরগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভক্ত সমাগম হচ্ছে বলেও তারা জানান।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মিটুল চন্দ্র দে বলেন, রাজস্থলীতে প্রতিটি পূজামণ্ডপে শান্তিপূর্ণ উদযাপন নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি। উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নে ১টি ও বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নে তিনটিসহ মোট চার টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, পূজামণ্ডপের ভেতরে ও বাইরে অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবক এবং আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজস্থলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, “রাজস্থলীর মন্দির গুলো তে কোনো পূজা মন্দিরেই উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি নেই। সব পূজা মণ্ডপেই সমানভাবে আমাদের নিরাপত্তা সুরক্ষার আওতায় রয়েছে। নির্বিঘ্ন উৎসব নিশ্চিত করতে প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বিশেষ পুলিশ টিম এবংসেনাবাহিনী, প্রশাসনের একাধিক টহল দল নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছে, যাতে সর্বত্র উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে।
উপজেলার রাজস্থলী ও বাঙ্গালহালিয়ার ইউনিয়নের মণ্ডপগুলো এ বছর নতুন সাজে সেজেছে। ঢাকের বাদ্য, ধূপের ঘ্রাণ আর ভক্তদের শ্লোকপাঠে চারপাশে সৃষ্টি হয়েছে অনন্য আধ্যাত্মিক পরিবেশ। স্থানীয় বাসিন্দা ও বাইরে থেকে আগত দর্শনার্থীদের মিলনে প্রতিটি মণ্ডপ যেন মিলনমেলার রূপ নিয়েছে।
দুর্গোৎসব চলবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী এবং বিজয়া দশমীর পূজা-পার্বণ একে একে সম্পন্ন হবে। পূজা উপলক্ষে রাজস্থলী উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারি এবং স্থানীয়দের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে পুরো এলাকা ইতিমধ্যেই এক প্রাণবন্ত, শান্তিপূর্ণ ও বর্ণাঢ্য শারদীয় দুর্গোৎসবে পরিণত হয়েছে।