বিশুদ্ধ পানি পেয়ে হাঁসি ফুটল থানচির টিএন্ডটি গ্রামবাসী

24

॥ থানচি, প্রতিনিধি ॥
বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার করতে পেয়ে হাঁসি ফুটেছে বান্দরবানের থানচি উপজেলা সদরে ২নং ওয়ার্ডে টিএন্ডটি পাড়া ৬০ মুসলিম পরিবারের প্রায় ৩০০ জন সদস্যরা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ-আর-ফয়সাল এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সহকারী প্রকৌশলী স্বপন চাকমা যৌথ সমন্বয়ের নতুন জিএসএফ পাইপ কিনে সংস্কার করে দিয়েছে।
৯ জুন বিভিন্ন পত্রিকা ঝিরির পানির পাই কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা: পাহাড়ে ৬০ পরিবারের ঈদের আনন্দ মলিন। শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি উপজেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্মকর্তারা নজরে পড়ে নতুন প্লাস্টি পাইপ ক্রয়ের মাধ্যমে বুধবার ১৬ জুলাই বিশুদ্ধ পানিয় সরবরাহের পাইপ সংঞ্চালন লাইন সংস্কারের সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ প্রতিনিধি সরেজমিনে দেখি দুুর্বৃত্তরা তিন শতাধিক টুকরো টুকরো করে প্লাস্টিকের পাইপ কেটে দিয়েছিল। তা নতুন করে সংযুক্ত করা হয়েছে। টিএন্ডটি পাড়া দুই হাজার লিটারের তিনটি পানির ট্যাংকিতে অনবরত পানি আসছে। সকাল থেকে গ্রামে মহিলারা ইচ্ছে মতো পানি নিতে দেখা গেচ্ছে।
টিএন্ডটি গ্রামে বাসিন্দা রেকসোনা বেগম, রোজিনা আক্তার বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মেকানিক লুকন ম্রো, খামলো ম্রোসহ তিন চারজন মিলে তিন চারদিন যাবৎ কাজ করে আমাদের পানির নতুন প্রাস্টিকের পাইপলাইন সংস্কার করে দিয়েছে এবং গতকাল বুধবার আমাদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে আমরা নিয়মিত পানির পেয়ে খুশি হয়েছি। রোকসানা বেগম বলেন, গত ঈদের দিন থেকে গতকাল পর্যন্ত প্রায় এক মাস পানির জন্য অনেক কস্ট পাইছিল এক কিলোমিটার দুরত্ব বাজার থেকে আনতে হতো।মাঝে মাঝে বৃস্টি পানির ও সংরক্ষণ করে রাখতে হতো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ-আর-ফয়সাল এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর যৌথ সমন্বয়ের নতুন জিএসএফ পাইপ ক্রয় করে সংস্কার করে দিয়েছে।
গত ৭ জুন পবিত্র ঈদ-ঊল-আজহারের পানির অভাবে পবিত্র ঈদের নামাজ সুন্দরভাবে পড়তে পারিনি। পুরুষ সদস্যরা স্থানীয় জামের মসজিদের স্ব-শরীরে গিয়ে নামাজ আদায় করলে ও নারী সদস্যরা রিতিমতো ঈদের নামাজ আদায় করার সম্ভব হয়নি। ঈদের আগের দিন দুুর্বৃত্তরা তিন শতাধিক টুকরো টুকরো করে প্লাস্টিকের পাইপ কেটে দিয়েছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, থানচি জামের মসজিদের জায়গা মাটি ভাড়া নিয়ে র্দীঘ ৫০ বছর ধরে মুসলিমরা স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। ২০১৮/১৯ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ অর্থায়নের টিএন্ডটি পাড়া হতে পুর্ব দক্ষিনের ৩ কিলোমিটার দুরত্বে ছাংদাক ঝিড়ির হতে টিন্ডটি পাড়া মুসলিম গ্রাম ৫০-৬০ পরিবারের জন্য গ্রাফিটি ফ্লো সিষ্টেম বিভিন্ন সাইজের প্রায় ৮ হাজার বর্গফুট লাম্বা (জিএফএস) পাইপের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল।
গ্রামবাসীরা জানান, গত কোরবানি ঈদের আগের দিন দুর্বৃত্তরা পাইলাইনটি শতাধিক টুকরো করে কেটে দিয়েছিল। টিএন্ডটি পাড়া গ্রামের হত দরিদ্র গরীব অসহায় পরিবারের পক্ষে নতুন জিএফএস পাইপ ক্রয়ের সম্ভব না হওয়া বর্তমান সরকারের নিকট সংস্কারের দাবী জানানো হয়েছিল।
মুঠোফোনের জনস্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী স্বপন চাকমা বলেন, জাতীয় আঞ্চলিক ও স্থানীয় পত্রিকা প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার এবং জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বান্দরবান জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মহোদয়ের মৌখিক নির্দেশের তরিগড়ি করে বরাদ্ধ না থাকলে ও বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজ করে চট্টগ্রাম শহর থেকে পানির জন্য প্রায় ৩ হাজার ঘন ফুট প্লাস্টিকের পাইপসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় মারামাল সংগ্রহ করে সংস্কার করে দিয়েছি। পানির অভাবে কস্ট পাবে এটা হতে পারে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ-আল-ফয়সাল বলেন, জাতীয় আঞ্চলিক ও স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশিত সংবাদে পরিপ্রেক্ষিতে পরিদর্শনে গেলে গ্রামে বাসিন্দারা নিজেদের মধ্যে বিবাদ জড়ানো কারনে পাইপটি কেটে দিয়েছিল। প্রশাসনিক ভাবে তাদের সতর্ক করে দিয়েছি ভবিষ্যতে এরুপ ঘটনার পুনরুপ হবে না বলে গ্রামবাসীরা অঙ্গিকার দিয়েছে। তাই জনস্বাস্থ্য অধিতপ্তরের কর্মকর্তা স্বপন চাকমাকে সংস্কার করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে এবং করে দিয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিভাগের জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম কুমার দে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান বার বার সংস্কার করার সম্ভব নয় গ্রামবাসীরা সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। গ্রামবাসীদের পক্ষে সংরক্ষনের প্রতিশ্রুতি পেয়ে এবারে সংস্কার করে দিয়েছি।