কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনায় অবস্থিত কর্ণফুলী রেয়ন মিল ২৩ বছর ধরে পে-অফ

9

॥ কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই ॥
কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় ২১ একর জায়গার উপর অপার সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কর্ণফুলী রেয়ন এন্ড ক্যামিকেল্স (কেআরাসি) কারখানা। ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সরকারের তৎকালিন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান কেআরসি কারখানাটি উদ্বোধন করেছিলেন। একই সাথে কেআরসি কারখানার সামনে বিশালাকার একটি টাওয়ার ক্লর্ক-ও সেদিন আইয়ুব খান উদ্বোধন করেছিলেন। কেআরসি কারখানাটি স্থানীয়ভাবে রেয়ন মিল হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। তবে এই কেআরসি কারখানাটি দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে পে-অফ রয়েছে। কেআরসির সামনে রক্ষিত যে টাওয়ার ক্লর্ক রয়েছে সেটিও গত প্রায় ১০ বছর ধরে অচল রয়েছে। যদিও এক সময় এই টাওয়ার ক্লকের ঘন্টার ধ্বনি কয়েক কিলেঅ মিটার দুর থেকেও শোনা যেত। এই ঘদির ঘন্টধ্বনি শুনে শ্রমিক কর্মচারি কর্মকর্তারা কারখানায় যাতায়াত করতেন। ক্লকটি এক দশক ধরে বন্ধ থাকলেও এখনো এর আকর্ষন হারিয়ে যায়নি। দুর দুরান্ত থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ এই টাওয়ার ক্লক পরিদর্শন করতে আসেন।
কেআরসি কারখানার সাবেক সাবেক সিবিএ সাধারন সম্পাদক বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী নুরুল ইসলাম আজাদ জানান, চালু হবার পর কেআরসি কারখানা ছিল পার্বত্যাঞ্চলের সবচেয়ে আধুনিক কারখানা। রেয়ন মিলের প্রধান উৎপাদন পন্য ছিল সেলোফেন পেপার, স্টেবল ফাইবার, অক্সিজেন, তিন প্রকারের কেমিক্যালস-সালফিউরিক এ্যাসিড, সোডিয়াম কার্বোনাইড, লিকিউইড এ্যাসিড ইত্যাদি। সচল অবস্থায় রেয়ন কারখানায় প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক কর্মচারি কর্মকর্তার কর্মসংস্থান ছিল বলে জানান কেআরসির প্রাক্তন শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম আজাদ। তন্মধ্যে পাহাড়ী বাঙ্গালী মহিলার সংখ্যা ছিল প্রায় ২৫০ জন। রেয়ন কারখানার উৎপাদিত পন্য দেশের চাহিদা মিটানো হতো। তবে কারখানাটি ২০০২ সালের আগ পর্যন্ত বিশাল লোকসানের মুখে পড়ে। অবশেষে ২০০২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালিন সরকার কেআরসি কারখানাকে পে-অফ ঘোষণা করে। সেই থেকে অদ্যাবধি কেআরসি পে-অফ রয়েছে। পে-অফ ঘোষিত হবার পর কেআরসির সকল শ্রমিক কর্মচারি কর্মকর্তাকে নিয়ম অনুযায়ী পাওয়া বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পে-অফ ঘোষিত হবার পর থেকে স্বল্প সংখ্যক নিরাপত্তা প্রহরীর মাধ্যমে কেআরসি কারখানার সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কেপিএমের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এবং কেপিএমের মহাব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) কেপিএমের দাপ্তরিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কেআরসি কারখানার দায়িত্বও পালন করছেন। পে-অফ কেআরসি কারখানার স্থলে নতুন কারখানা বসানোর পরিকল্পনা বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে বলে জানা গেছে। সেই লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কাজ করছে বলে সংশ্লিস্ট সুত্র জানিয়েছে।