লামা পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে দিতে হয় টোল

21

॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥
বিক্রিত পশুর উপর বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি টোল দিতে হয় লামা বাজারে পশুর হাটে। এখানে পশুর বিক্রয় মূল্যের উপর ক্রেতাকে ২ শতাংশ এবং বিক্রেতা ২ শতাংশ মোট ৪ শতাংশ টোল দিতে হয়। এতে করে দূর্বিসহ অবস্থায় পড়তে হয় পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে আসা লোকজনকে। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও লামা পৌরসভার দ্বৈত টোলের বিষয়ে গত ২ দশক থেকে বলে আসলেও কোন সুরাহা হয়নি। টোলের নামে গলা কাটা হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
লামা বাজারে জেলা পরিষদ কর্তৃক টোল আদায়কারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলা পরিষদের ইজারাদার পশু বিক্রির উপর ২ শতাংশ টোল আদায় করেন। একই বাজারে ২০০৪ সাল থেকে টোল আদায় করছে লামা পৌরসভা। লামা পৌরসভার ইজারাদার একই পশুর উপর আরো ২ শতাংশ টোল আদায় করছে। এতে করে একটি পশু বিক্রি করলে ক্রেতা লামা পৌরসভাকে ২ শতাংশ ও বিক্রেতা জেলা পরিষদকে ২ শতাংশ মোট ৪ শতাংশ টোল দিতে হয়। প্রতি লাখে ৪ হাজার টাকা টোল দিতে হয়।
মঙ্গলবার লামা বাজারে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশু বিক্রি করতে আসা শামসুল ইসলাম, মোবারক আলী ও নুরুন্নাহার বেগম সহ অনেকে বলেন, টোলের নামে লামা বাজারে জুলুম করছে। বাংলাদেশের কোথাও এত টোল আদায় হয়না। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও লামা পৌরসভা একই পশুর উপর দুইবার টোল নেয়। এই জুলুম বন্ধ করা উচিত।
এদিকে রপ্তানী পণ্যের উপরও দ্বৈত কর আরোপ করায় দিশেহারা লামা ও আলীকদম উপজেলার কৃষক। একই কৃষিপণ্য থেকে জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ পৃথকভাবে তিনবার কর নেয় বলে জানিয়েছেন সাধারণ কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এছাড়া পণ্যের উপর ধার্যকৃত টোল এর পরিমাণ অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন তারা। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির বাজারে দ্বৈত কর ও ধার্যকৃত টোলের হার বেশি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারণ। গত দুই দশক ধরে এ সমস্যা নিয়ে অনেক দেনদরবার হলেও কোন সমাধান হয়নি।
দ্বৈত কর আরোপের বিষয়টি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ অবহিত হলে গত ২৭ এপ্রিল ২০২৫ইং তারিখে ২৯.৩৫.০৩০০.০০৩. ৪২.০৫৮.২৫.৭১৯ নং স্মারকের এক পত্রে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই আলীকদম উপজেলা পরিষদের টোল আদায় কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। অফিস আদেশ দিলেও তা মানছেনা আলীকদম উপজেলা পরিষদের রেপারপাড়া বাজারস্থ টোল আদায় পয়েন্টটি।
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রশাসক আলীকদম উপজেলা পরিষদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন বলেন, টোল আদায় কার্যক্রমের বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে। পশু ও কৃষি পণ্যের দ্বৈত কর এর বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মঈন উদ্দিন বলেন, দ্বৈত কর এর বিষয়ে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। টোল নিয়ে খামারী ও কৃষককে হয়রাণী না করতে অনুরোধ করেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।