রাবিপ্রবি’তে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স এন্ড বায়োসায়েন্স কার্নিভালের (আইসিবিসি) ২য় দিনের টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত

17

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) ও বাংলাদেশ বায়োসেইফটি ও বায়োসিকিউরিটি সোসাইটি (বিবিবিএস) এর যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো আয়োজিত তিনদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কনফারেন্স এন্ড বায়োসায়েন্স কার্নিভাল (আইসিবিসি) এর দ্বিতীয় দিন শনিবার (১৭ মে) সকাল ৯টা হতে টেকনিক্যাল সেশন শুরু হয় এবং বিকাল ৩:৪৫ ঘটিকা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সেশনগুলো রাবিপ্রবি’র একাডেমিক ভবন-১ এর সম্মেলন কক্ষে, কক্ষ নং ১০০১ ও ১০০২ এ নির্ধারিত প্রোগ্রামসুচি অনুযায়ী ৩টি টেকনিক্যাল সেশন যথাক্রমে সকাল ৯:০০ থেকে ১০:৪০, ১১:০১ থেকে ১:০০ এবং ২:০১ থেকে বিকেল ৩:৪৫ ঘটিকা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি সেশনে কিনোট ও ইনভাইটেড স্পীচসহ প্রতি সেশনে ৭-১০টি করে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। অন্যদিকে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত পোস্টার প্রদর্শিত হয় এবং নির্বাচকমন্ডলী সেগুলো মূল্যায়ন করেন।
টেকনিক্যাল সেশনসমূহের চেয়ার ও কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যথাক্রমে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর পরিচালক প্রফেসর ড. তোফাজ্জল ইসলাম ও প্রাণীসম্পদ বিভাগের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোঃ বয়জার রহমান; গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্িত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হোসাইন উদ্দিন শেখর ও রাবিপ্রবি’র ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নিখিল চাকমা; মুগদা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান প্রফেসর ড. সালমা আহমেদ ও আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি এর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান কর্ণেল ড. জামাল পাশা চৌধুরী; ড. দিলরুবা আহমেদ ও ড. মোঃ লতিফুল বারী; প্রফেসর ড. কাজী নাদিম হাসান ও প্রফেসর ড. মোঃ শহিদুল ইসলাম; রাবিপ্রবি’র ভাইস-চ্যান্সেলর ও আইসিবিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান ও রাবিপ্রবি টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান মোসা. হাবিবা; নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোঃ আবদুল খালেক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শ্রাবন্তী সাহা; শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী ও রাবিপ্রবি ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুপ্রিয় চাকমা; যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম এ মজিদ ও রাবিপ্রবি সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ও সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব ধীমান শর্মা।
আজকের কনফারেন্সে-প্রাণী ও কৃষিতে উদীয়মান এবং পুনরাবির্ভূত সংক্রামক রোগের রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা; ওষুধ আবিষ্কার এবং উন্নয়ন ১; ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিস; অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ; সংক্রমণ প্রতিরোধ, জৈব নিরাপত্তা এবং জৈব নিরাপত্তা; মানব প্রাণী ও পরিবেশগত স্বাস্থ্যে বিকল্প চিকিৎসা এবং প্রাকৃতিক পণ্য; বহুবিষয়ক উন্মুক্ত উপস্থাপনা-এই সাতটি মূল বিষয়ের উপর বিভিন্ন শিরোনামে প্রায় ৮৪টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন গবেষকবৃন্দ।
এ আইসিবিসি কনফারেন্সে স্বনামধন্য বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেমন: আইসিডিডিআরবি, সিডিআইএল, বিসিএসআইআর, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, ডিএআই গ্লোবাল, প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট, সুয়ো জি হাসপাতাল, ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল রির্সোসেস রির্সাচ এন্ড ডেভেলাপমেন্ট (রাজশাহী) এর গবেষকগণ তাদের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্িত বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্িত বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্িত বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্িত বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয় , ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনির্ভাসিটি চট্টগ্রাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনির্ভাসিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম, সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় এবং মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি এর অধ্যাপক-গবেষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
উল্লেখ্য যে, রাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থী-গবেষকদের ৩টি গবেষণাপত্র উপস্থাপিত হয়। এসব গবেষণায় পার্বত্য অঞ্চলের এথনোমেডিসিনাল প্ল্যান্টস, কৃষিতে নবউদ্যোগ, বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের কীট ও রোগের প্রভাবের বিষয়গুলো উঠে আসে এসব গবেষণায়।
প্রতিটি গবেষণাপত্রে গবেষণার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, ফলাফল, প্রভাব এবং করণীয় বিষয়ে প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। বৈচিত্র্যময় বায়েসায়েন্সের গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ গুলোর মধ্যে পশুসম্পদ ও কৃষিতে ইমার্জিং ও রিইমার্জিং রোগসমূহ, কৃষিতে ইকোলজিক্যাল ডাইভার্সিটি, পশুসম্পদে সমস্যা, সম্ভাবনা ও করণীয়, ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়াল রোগসমূহ, বন্য ও পোষাপ্রাণীদের সংক্রামক রোগসমূহ, ক্যানসার-ডায়বেটিকসসহ বিভিন্ন রোগের ঔষধ ও ঔষধ শিল্পের উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য, হাসপাতালের বায়োসেফটি ও বায়োসিকিউরিটি ব্যবস্থাপনা, বঙ্গোপসাগরের মেরিন ফিশারিজ ব্যবস্থাপনা, শীপব্রেকিং শিল্প, ঔষধের বিকল্প পণ্য ও ঐতিহ্যবাহী ভেষজ ঔষধ শিল্প ইত্যাদি বিষয় উপস্থাপন, আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও বিজ্ঞানীদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।
এ কনফারেন্সের দ্বিতীয় দিনে সমাপনী বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং আইসিবিসি এর কো-চেয়ার ডা. চন্দন কুমার রায়। তিনি দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত অধ্যাপক ও গবেষকবৃন্দকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং বিবিবিএস এর সূচনালগ্নের ইতিহাস ও করোনাকালে ল্যাব সেবা প্রদান করে স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি রাবিপ্রবির’র সাথে ভবিষতে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
রাবিপ্রবি’র ভাইস-চ্যান্সেলর ও আইসিবিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত গবেষকদের প্রতিষ্ঠানে কিংবা ল্যাবে রাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশীপ করার সুযোগ সৃষ্টি ও সহযোগিতার জন্য আহবান জানান। তিনি কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক এবং রাবিপ্রবি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, পৃষ্ঠপোষক এবং মিডিয়া পার্টনারদের ধন্যবাদ জানান।