রাঙ্গামাটিতে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ না করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

11

॥ নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
পাহাড়ে শান্তি সম্প্রীতি রক্ষাসহ নাগরিক সেবা পৌঁছে দিতে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সুশীল সমাজের নাগরিকরা। তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অপসারনে যে প্রস্থাব করা হচ্ছে এতে করে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পেতে ব্যাহত হবে বলে মনে করেন তারা। তাই ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা যে দলের হোক তাদের অপসারণ না করতে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান স্থানীয় সুশীল সমাজের নাগরিকরা।
রবিবার (২০ অক্টোবর) সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন রাঙ্গামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বার অপসারণ না করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী জানান বক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তরুণ জ্যোতি চাকমা, বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও নানিয়ারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি চাকমা, সুবিমল চাকমা প্রমুখ।
তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের সর্বশেষ ভরসাস্থল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অপসারণ করে প্রশাসক ও শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অপসারণ করে আমলাতান্ত্রিক উপায়ে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করলে এই দূর্গম পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা প্রাপ্ত হতে বঞ্চিত হবেন। ইউনিয়ন পরিষদ প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষের যানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য রাতদিন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ও সরকারের প্রান্তিক পর্যায়ের সেবা সাধারণ মানুষের পৌঁছে দিচ্ছে। এই অবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অপসারণ করা হলে জনপ্রিয় অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের ভাবমূর্তি ভুন্ন হবে এবং জনমনে অসন্তোষ দেখা দিবে। ফলে যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে এই সরকার গঠিত হয়েছিল তা অর্জিত হবে না। তাই ইউনিয়ন পরিষদের নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বহাল রাখার জন্য দাবি জানান বক্তারা।
বক্তারা আরো বলেন, স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ের জনপ্রশাসনের সঙ্গে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বোঝাপড়া সাবলীল বা সহজ নয়। ইউপি চেয়ারম্যানরা না থাকলে আকস্মিক ও গুরুতর কোনো ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণে কোনো অভিভাবক থাকবে না। উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা এখন আর নেই। সে ক্ষেত্রে সাধারণের মুখপাত্র হিসেবে প্রশাসন বা রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয়দের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের সহায়তা শূন্যের কোটায় গিয়ে ঠেকবে, যা উদ্বেগজনক। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অপসারণের বিষয়টি আলোচনায় আসায় এ নিয়ে আরও বেশি উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা। আর এমনটা হলে থমকে যাবে গ্রামীণ উন্নয়ন। বাড়বে সহিংসতা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে। আর দৈনন্দিন জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ অন্য যে কাজগুলো দৈনন্দিন করতে হয়, সেগুলোতে জনদুর্ভোগ ও গ্রামীণ পর্যায়ের উন্নয়ন কার্যক্রম থমকে যাবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রশাসনের কাজের অন্যতম সহায়ক শক্তি। স্থানীয় পর্যায়ে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে চেয়ারম্যান মেম্বারগন। দেশের বর্তমান অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য তাদের আবশ্যকতা রয়েছে। এ মুহূর্তে তাদের অপসারণ ঘটলে স্থানীয় পর্যায়ে বিশৃঙ্খলা ঘটতে পারে। তাদের দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা প্রদান করেন বক্তারা।