খাগড়াছড়িতে নিষেধাজ্ঞায় পর্যটক শূন্য, আড়াই সপ্তাহে লোকসান প্রায় ১০ কোটি টাকা

44

॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও নিষেধাজ্ঞায় মুখ থুবড়ে পড়েছে খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্প। সারাবছর পর্যটককে মুখরিত থাকলেও চিরচেনা সেই দৃশ্য এখন আর নেই। শারদীয় দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে চার দিনের ছুটি থাকলেও হোটেল-মোটেলগুলোতে বুকিং নেই। পর্যটক না থাকায় রুমগুলো ‘ফাঁকা’ পড়ে আছে। অলস সময় কাটাচ্ছেন পর্যটকবাহী গাড়ির চালকরা। ব্যবসায়ীরা জানান, গত আড়াই সপ্তাহে পর্যটক সংশ্লিষ্ট খাতে অন্তত ১০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
কোন উৎসব ছাড়াও সারা বছর খাগড়াছড়ির পর্যটক কেন্দ্র হাজারো পর্যটকের পথভাবে মুখর থাকতো। খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলা, রিসাং ঝরনা, জেলা পরিষদ পার্কসহ কোনো কেন্দ্রেই কোনো পর্যটক নেই। আলুটিলা সবসময় পর্যটককে ঠাসা থাকলেও এখন সেখানে ‘সুনসান নিরবতা’।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মামুম নাতে এক বাঙালি ব্যবসায়ীকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনার পর গত ১৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে খাগড়াছড়িতে পর্যটক আসেনি। এর পর গত ১ অক্টোবর শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনায় খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সহিংসতায় প্রাণ গেছে ৪ জনের। এরই মধ্যে প্রশাসন আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
ফলে শারদীয় দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে চারদিনের ছুটি থাকলেও হোটেল-মোটেলগুলোতে বুকিং নেই। পর্যটক না থাকায় রুমগুলো ‘ফাঁকা’ পড়ে আছে। অলস সময় কাটাচ্ছেন পর্যটকবাহী গাড়ির চালকরা। পর্যটন কেন্দ্রের আশপাশের অনেক রেস্টুরেন্ট ও দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। বেতন দিতে পারছে না শ্রমিকদের। এ সংকটের অবসান চান পর্যটক নির্ভর মানুষগুলো।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পাহাড়ে পর্যটক সমাগমও বাড়ছিল। এরই মধ্যে ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মামুন হত্যাকাণ্ডে ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে ‘পাহাড়ি-বাঙালি’ সংঘর্ষের পর পর্যটন শিল্পে ছন্দপতন ঘটে।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ইউনিট ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার মজুমদার বলেন, পর্যটক নেই, আয়ও নেই। কর্মীদের বেতন দিতে পারছি না। আগাম বুকিং বাতিল করেছে অনেকে। এতে লোকসানের মুখে পড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। প্রশাসন থেকে নিশেধাজ্ঞা শিথিল করা হলে আবারো পর্যটকরা আসবেন। এতে ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
আলুটিলা কফি হাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক মো. মামুন জানান. নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনো পর্যটক নেই। প্রতিদিনই আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পর্যটকরা আসলে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হবে।