॥ কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই ॥
কাপ্তাই উপজেলার একটি পাহাড়ে গাদাগাদি করে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন প্রায় ৮শ পরিবার। বসবাসকারিরা এতটাই ঝুঁকিতে রয়েছেন যে তাদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে সবসময় চিন্তিত থাকতে হয়। বিশেষ করে ভারি বৃষ্টি বা ঝড় তুফান শুরু হলেই ঝুঁকিতে বসবাসকারিদের কথা সবার আগে প্রশাসনের মনে পড়ে। কাপ্তাই নতুনবাজারের ঢাকাইয়া টিলায় এইসব বসতিরা দিনের পর দিন পরিবার পরিজন নিয়ে অবস্থান করছেন।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে প্রায় দুই একর জমি নিয়ে গঠিত ঢাকাইয়া টিলার পুরোটা জুড়েই বসতি গড়ে উঠেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল লতিফ বলেন, আমরা সবাই জানি ঢাকাইয়া টিলাই যারা চবসবাস করছেন তারা চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন। এই বসতিদের প্রায় সবাই অত্যন্ত নিন্ম আয়ের মানুষ। এরা কেউ বাসাবাড়িতে কাজ করেন, কেউ ঠেলা গাড়ি চালান, কেউবা দিন মজুরের কাজ করেন। তবে অনেক ভালো পরিবারের লোকজনও এখানে বসবাস করছেন। মূলত জায়গার অভাবে এরা ঝুঁকি নিয়ে এই পাহাড়ে বসবাস করছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ জায়েদ হোসেন বলেন, ঢাকাইয়া টিলায় ঘরগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে একটার সাথে আরেকটা লেগে আছে। খাড়া পাহাড়ের ঢাল কেটেও কেউ কেউ ঘর তুলেছেন। একটি ঘর কোনমতে ধসে পড়লে একসাথে অনেক ঘরবাড়ি হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও তিনি জানান। এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে বিপুল সংখ্যক মানুষ হতাহতের কবলে পড়বে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। ঘরবাড়ি গুলো এতটাই ঘিনজির মধ্যে রয়েছে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে এখানে দমকল বাহিনী বা এ্যাম্বুলেন্স যাবার কোন সুযোগও নেই। নাগরিক সুবিধা বলতেও এখানে মেতন কিছু নেই।
স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউছুপ মিয়া বলেন, ভারি বৃষ্টিপাত বা ঝড় তুফান দেখা দিলেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাপ্তাই উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়। তখন অনেকে ঢাকাইয়া টিলা ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে এসে অবস্থান নেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সবাই আবার যথারিতি ঢাকাইয়া টিলায় ফিরে যান।
এ ব্যাপারে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, দূর্যোগপূর্ণ আবহওয়া দেখা দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়। তখন ঢাকাইয় টিলার অনেককে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। তিনি বলেন কাপ্তাইয়ে মৌজা না থাকায় এই ঝুঁকিপূর্ণ বসতিদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। কাপ্তাইকে মৌজা ঘোষণা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।