রুমায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহন চলছে, নেই ভোটারের দীর্ঘ লাইন

54

॥ রুমা প্রতিনিধি ॥
রুমায শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটারেরা ভোটাধিকার প্রয়োগ কলেও ভোট গ্রহন চলছে খুব ধীর গতিতে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নেই অপেক্ষমান ভোটার। নিরব পরিবেশ। নেই কোনো ভোটারের ভীর বা জমায়েত।
রোববার (৭ জানুয়ারী) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহন সকাল ৮টা ভোট থেকে ভোট গ্রহন শুরে হয়। তবে ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে রুমা সদরে বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে সরে জমিনে ঘুরে এই দৃশ্য দেখা গেছে।
সকাল নয়টায় কংগো পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরে জমিনে দেখা গেছে, লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষমান কোনো ভোটার নেই। দুইশ গজের দুরে রাস্তার ধারে একটি ছায়া স্থানে বসে ও দাঁড়িয়ে ১৫/১৬ জন নৌকার প্রতীকে ভোটা স্লীপ কার্ড নিয়ে অপেক্ষমান। ভোটার আসলে ভোটার দিয়ে দিবে, যাতে ভোটারেরা ভোট কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগে সহজ হয়। ভোট কেন্দ্র সামান্য দুরে গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে ছিল কয়েকজন তরুন।
এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. আজিজ জানান, সকাল ১০টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ১৬শতাংশ ভোটার ভোট দান করছেন। দুপুরের হয়তো আরো বাড়তে পারে।
এ প্রতিবেদক তাদের সামনে এগোতেই নুসাইমং মারমা বলেন, একটু আগেই তার ভোট দিয়ে এসেছেন। সে নতুন ভোটার হয়েছেন। এবার প্রথম ভোটাধিকার প্রয়োগ তার।
নুসাইমং এর মা একজন বিধবা। তার মায়ের নামে সরকারী ঘর হয়েছে। ঘরের সামনেই গেছে কার্পেটিং রাস্তা। ঘরের পাশে বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ স্থাপিত। এসব তো বীর বাহাদুর আওয়ামীগ করে দিয়েছে। তাই আমি যে নৌকায় ভোট দিয়েছি, এ সত্য কথা বলতে কোনো সংকোচিত নয় বলেন নুসাইমং।
কংগো থেকে দুই কিলোমিটার দুরত্বে বেথেল পাড়া সরকারী প্রাথমিক ভোট কেন্দ্র। এ কেন্দ্রে ভোট কক্ষের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে কোনো ভোটার লক্ষ্য করা না গেলেও মিনিট দেড়েক পর পর একজন-দুইজন এসে ভোট কক্ষে প্রবেশ করে চলে যেতে দেখে যায়।
এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, সকাল ১০টা পর্য়ন্ত ১২ শতাংশ ভোট হয়ে গেছে। দুপুর বাড়ার সাথে সাথে ভোট কেন্দ্রে মানুষ আসতে পারে।
কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে আছে- তিন তরুনী। তারা নতুন ভোটার। প্রথমবারের মতো ভোট দেবে। তাদের মধ্যে আলাপ চলছিল ব্যালট কীভাবে ভাস করবে। সহপাঠি আরেক দুইজনের সাথে সকালে মিনঝিরি পাড়া থেকে সকালে এসেছেন ওয়াংহ্লাচিং মারমা। আগে কখনো ভোট দেয়নি। ভোট নষ্ট যাতে নষ্ট না-হয়, সে চিন্তাই ছিল। মেসিংনু ও অংমেপ্রু এই দুইজন কীভাবে ভোটের ভ্যালট পেপার ভাস করবে, তা শিখে এসেছে। নিজেদের প্রতি দৃঢ় আস্থা আছে, কোনো ভোট নষ্ট হবেনা। তবে তিনজনের একটি জায়গা মিলে গেছে- তারা সবাই বীরের প্রতীক নৌকায় ভোট দেবে।
রুমা বাজার ভোট কেন্দ্রের বাইরে মায়ে সাথে বসে আছে মিলকা ত্রিপুরা। নতুন ভোটার এ তরুনিও দুর্গম ভাগ্যমনি পাড়া থেকে পায়ে হেটে ভোট দিতে এসেছে। এর মধ্যে ভোট দেয়া হয়ে গেছে।
আনার্সে পড়ুয়া মিলকি ত্রিপুরা জীবনে প্রথম ভোট নৌকায় ভোট দিয়ে স্মৃতি সূচনা করলেন। তবে তার ভাষ্য ব্যতিক্রম। বলেন আমাদের এখানে রাস্তাঘাট ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন করেছে অনেক। রুমার মানুষ চাকরী কম পায়। শিক্ষিতরা বেকার থাকতে হচ্ছে। কর্মসংস্থান তৈরি হয়না। তার ভাষ্যমতে, সে শুনেছেন- চাকরী নিতে লাখ লাখ টাকা দেয়া লাগে। এটা তার চিন্তা। তবে আমাদের বীর বাহাদুর আবার মন্ত্রী হলে টাকা নিয়ে চাকরী দেয়ার বিষয়টি দেখলে আমাদের জন্য ভাল হয়। তা নাহলে টাকা দিয়ে চাকরী নিতে পারবনা, বলেন- নতুন ভোটার মিলকি ত্রিপুরা।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় ১৮ ভোট কেন্দ্রে নারী পুরুষ ২১ হাজার ৮৫৮ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ চলছে। নির্বিঘ্নে ভোটারেরা ভোট দিচ্ছে। সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট গ্রহন বিকাল চারটা পর্যন্ত চলবে।