নাইক্ষ্যংছড়িতে স্কুল বোডিং স্থাপনের নাম ভেঙ্গে ভুমি দখলের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

95

শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়িঃ-বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সোনাইছড়ি ইউনিয়নে একটি বেসরকারী হোটেল কর্তৃপক্ষ স্কুল বোর্ডিং স্থাপনের নামে ১৫০ একর বন্দোবস্তি ভুমি বেদখলের করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা।
রবিবার (৯এপ্রিল) সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে সামনে ভুক্তভোগী জনসাধারণের ব্যানারে এ মানব বন্ধন অনুষ্টিত হয়। মানববন্ধনে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের আটশতাধিক লোকজন এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে সুইথোয়াই চিং মারমা বলেন, এলাকাবাসীর বন্দোবস্তকৃত ভুমি কক্সবাজারের বেসরকারী “হোটেল সীগাল এর নামে ১৫০ একর জায়গা বেদখল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। সেই জায়গায় ৩৫০ মারমা পরিবার বসবাস করছে। সেখানে হোটেল কর্তৃপক্ষ স্কুল বোর্ডিং স্থাপন করলে সেখানে বসবাসকারীরা উচ্ছেদ হয়ে যাবে এটা মেনে নেওয়া যায়না। এই নির্মান প্রক্রিয়া বন্ধ করা না হলে আরো বৃহত্তর কর্মসুচী দেওয়া হবে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি।
মানব বন্ধনে সংহতি জানিয়ে চাক সম্প্রদায়ের নেতা মংচিং চাক বলেন, এর আগেও নাইক্ষ্যংছড়িতে বিভিন্ন কোম্পানী ও প্রতিষ্টানের নামে ভুমি বেদখল করা হয়েছে। যার ফলে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ৮টি চাক সম্প্রদায়ের পাড়া ও ৮টি মারমা সম্প্রদায়ের পাড়া উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলো এখনো বিভিন্ন জায়গায় উদ্ভাস্তু হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাই ভুমি বেদখলের বিরুদ্ধে সকল ন্যায্য আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, গত ২ এপ্রিল নাইক্ষ্যংছড়ি ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ অহিদ উল্লাহ স্বাক্ষরিত নোটিশের মাধ্যমে জানতে পারি যে আন্তর্জাতিক মানের সীগাল বোর্ডিং স্কুল স্থাপনের নাম করন করে সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বংশপরম্পরায় বসবাস করে আসা ৩৫০ মারমা পরিবারের ভোগদখলীয় ও বন্দোবস্তকৃত জমি থেকে ১৫০একর জায়গা বেদখলে পাঁয়তারা করছে। এই অবৈধ বেদখল কোনমতেই মেনে নেওয়া হবে না।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, এলাকার আদিবাসী লোকজনকে ক্ষতিগ্রস্থ করে বাইরের কাউকে ভুমি বন্দোবস্ত দেওয়া হবে না। তিনি নাইক্ষ্যংছড়িতে দায়িত্ব নিয়ে আসার পর বাইরের কাউকে ভুমি বন্দোবস্ত দেননি বলে জানান। কিন্তু স্থানীয় লোকজনকেও ভুমি বেদখলের বিষয়ে সচেতন থাকার আহবান জানান তিনি।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, মংচাচিং চাক, মংবাচিং তঞ্চঙ্গ্যা, শিক্ষক মংচিং নাই মারমা প্রমূখ।
ঘন্টাব্যাপী মানবন্ধন শেষে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর মাধ্যমে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়। হোটেল সীগালকে স্কুল নির্মানের নামে জায়গা দেওয়া হলে ৩৫০টি মারমা পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ভুমি থেকে উচ্ছেদ হবে, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ জীব বৈচিত্র ধংস হবে বলে উল্লেখ করাহয়।