কাউখালীর বেতবুনিয়ার পাহাড় ধসে ২ নির্মাণ শ্রমিক নিহত ঘটনায় বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

127

কাউখালী প্রতিনিধিঃ-কাউখালীর বেতবুনিয়ায় অবৈধভাবে পাহাড় কেটে বাড়ি নির্মাণের সময় পাহাড়ধসে দুই নির্মান শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় দুই দিনের মাথায় অবশেষে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে হত্যামামলা দায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন নিহত শ্রমিকের পবিবার। শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাতে কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএস শহীদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে এর আগে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেম করে পরিবারের নিকট হস্তান্তরসহ যাবতীয় কাজ সম্পাদন করতে বেশ গোপনীয়তা করেছে বলে অভিযোগ উঠে। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি মহল দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বেশ তৎপরতা চালাচ্ছিলেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ার মনাইপাড়া এলাকায় এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উপজেলার বেতবুনিয়া মডেল ইউনিয়নের মনাইপাড়ার মাইল্যাছোলা নামক এলাকায় ডলুছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাধন বড়ুয়ার বাড়িতে শুক্রবার সকালে ওই দুই শ্রমিক মারা যান। মূলত ওই বাড়ির কাজেই নিয়োজিত ছিলেন তারা। সেখানে বাড়ির পাশে পূর্বে পাহাড় কাটা ঘেঁষে নতুন করে ওয়াল নির্মানের জন্য কাজ করছিলেন দুই শ্রমিক। হটাৎ করে পুর্বে কাটা পাহাড় ধসে পড়ে এই দুই শ্রমিকের উপর। এতে ধ্বসে পড়া পাহাড়ের মাটি চাপা পড়েন দুই শ্রমিক।
খবর পেয়ে এলাকার লোকজন দৌঁড়ে এসে দুই শ্রমিককে উদ্ধার করার চেষ্টা চালান। কিন্তু দুই শ্রমিক ততক্ষণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন। মৃত শ্রমিকরা হলেন মোঃ পেয়ার মোহাম্মদ (৫০) ও সুফল বড়ুয়া (৩৮)। এরমধ্যে পেয়ার মোহাম্মদ কাউখালীর বেতবুনিয়া দক্ষিণ পাড়ার মৃত কবির আহমদ মিস্ত্রির ছেলে এবং সুফল বড়ুয়া বেতবুনিয়া বেনুবনের অঞ্জন বড়ুয়ার ছেলে।
পরে খবর পেয়ে বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ দল দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে মৃত দুইজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির আইসি পুলিশ পরিদর্শক বিকাস সরকার জানান।
তবে শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টা পাহাড় ধসে দুই নির্মাণ শ্রমিক নিহত হলেও ঘটনাটি গোপনীয়তার জন্য একটি মহল তৎপরতা চালায়। ফলে শনিবার বিকেল পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ হতে কোন লিখিত অভিযোগ করা হয়নি কাউখালী থানা। ‘দুই শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে’ স্থানীয়দের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে কাউখালী থানার ওসি এসএস শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেউ অভিযোগ দিলে মামলা দায়ের করা হবে’।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাত এগারটায় কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএস শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন ‘নিহত শ্রমিক পেয়ার মোহাম্মদের ছেলে বাদী হয়ে ৩০৪-ক/০৪ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় বাড়ির মালিক সাধন চন্দ্র বড়ুয়ার বিরুদ্ধে মামলা করছেন। এখন প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হবে’।