নাইক্ষ্যংছড়িতে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে শিক্ষিকার ওপর হামলা, সেই পাহাড়ী যুবককে পুলিশে দিলো এলাকাবাসী

12

॥ শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি ॥
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর উপজেলার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে হামলার শিকার হন গত মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর )। আহত শিক্ষক জেসমিন আক্তার বর্তমানে প্রাইভেট চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর ) দুপুরে শিক্ষক জেসমিন আক্তার প্রতিদিনের মতো স্কুল টিফিন ছুটিতে দুপুরের খাবার খেতে যান ঘরে। খাবার শেষে যথাসময়ে স্কুলে যাওয়ার সময় স্কুল পাড়ার সড়কে পাশের জঙ্গলে কাছাকাছি পৌঁছালে ওতপেতে থাকা উপজাতি যুবক ওই সহকারী শিক্ষিকা জেসমিন আক্তারকে প্রথমে মাথায় আঘাত করে। পরে দস্তা দোস্তিতে বেধড়ক কিল-ঘুষি আর গলাটিপে ধরেই রক্তাক্ত জখম করে। সেই মুহুর্তেই আর্ত-চিৎকার শুনে পাশের এক বাড়ী থেকে নুরুল আলম সাঈদ নামে এক ব্যাক্তি দৌড়ে আসতে শিক্ষিকা জেসমিনের মোবাইল, টাকাসহ ব্যান্টি ব্যাগ ও স্বর্ণের দূল ছিনিয়ে পালিয়ে যায়। পরক্ষনে নুরুল আলম সাঈদ হামলাকারীকে খুঁজাখুঁজি সময় চারদিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসি আক্রমণকারীকে খুঁজাখুঁজি করতে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কালো প্রিন্টের একটি ব্যবহৃত শার্ট (জামা) উদ্ধার করা হয়।
আহত শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার জানান, স্কুল টিফিন ছুটিতে প্রতিদিনের মতো দুপুরে খেতে যায়। যথাসময়ে স্কুলে যাওয়ার পথে হঠাৎ করে এক পাহাড়ী যুবক আমার মাথায় আঘাত করে। পায়ে লাথি মারাতে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এক পর্যায়ে তার সাথে দস্তা দোস্তিতে আমাকে বেধড়ক মারধর কিল-ঘুষি মারতে থাকে। আমি চিৎকার করলে আমার মুখ কিল-ঘুষি আর গলায় টিপেই শ্বাসরুদ্ধকর করার চেষ্টা চালায়। পরক্ষণে আমার ব্যবহৃত মোবাইল, টাকা, ব্যাংক চেক বইসহ ব্যানিটি ব্যাগ আর স্বর্ণের কানে দূল চিনিয়ে পালিয়ে যায়। তবে হামলাকারী এক পাহাড়ী যুবক বলে আমি নিশ্চিত করতে পারছি।
মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাষ্টার শফিক রহমান জানান, এই ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তা সাথে শিক্ষক ও এলাকার উপজাতি হেডম্যান-কারবারি এবং গন্যমান্য ব্যাক্তিদের বৈঠকে প্রশাসন হামলাকারী অংসাপ্রু মার্মাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে হাজির করিয়ে দেওয়ার আল্টিমেটম বেঁধে দেন প্রশাসন।
সেই প্রেক্ষিতে এলাকাবাসী বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে দায়িত্ব নিয়ে খুঁজাখুঁজি করে অংসাপ্রু মার্মা নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। আটককৃত পাহাড়ী যুবকের নাম অংসাপ্রু মার্মা প্রকাশ কানাইয়া (২৪)। সে সদর উপজেলার ধুংরী হেডম্যান পাড়ার মংহ্লা প্রু মার্মার ছেলে।
এদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাসরুরুল হক জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার ওপর হামলাকারী অংসাপ্রু মার্মা (২৪) নামে একজন পাহাড়ী যুবককে ধুংরী হেডম্যান পাড়াবাসীরা আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।