॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ষষ্ঠীতে শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজা। পরের তিন দিন আনন্দের বর্ণিল ছটা ছড়িয়ে যায় সর্বত্র। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সেখানে বাজলো বিষাদের করুণ সুর। বছর ঘুরে আবার আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাখো ভক্তকে ভারাকান্ত করে দোলায় চড়ে বিদায় নিলেন দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা। এরই মধ্যদিয়ে শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসব।
বিজয়া দশমী শেষে বৃহস্পতিবার রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে বিসর্জন দেয়া হয়েছে দেবী দুর্গাকে। সন্ধ্যায় কাপ্তাই হ্রদের তীরে ‘দুর্গা মা কি, জয়। মহামায়া কি, জয়।’ একের পর এক এমন জয়ধ্বনি, ঢাক-ঢোল, কাঁসর ও ঘণ্টা বাজিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।
ভক্তকুলকে কাঁদিয়ে মর্ত্য থেকে প্রস্থান করলেন জগতের দুর্গতিনাশিনী দেবীদুর্গা। নানা আচার অনুষ্ঠানে পূজা অর্চনার মধ্যদিয়ে সার্বজনীন অংশে রাঙ্গামাটিতে শেষ হল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় শুভ বিজয়া উপলক্ষে বিসর্জনের আগে রাঙ্গামাটি সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন মন্দির থেকে প্রতিমাকে বের করে ট্রাক শোভাযাত্রা সহকারে শহরের প্রধান সড়ক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা প্রদক্ষিণ করে। এসময় সনাতন ধমালম্বী বিপুল সংখ্যক শিশু ও নারী পুরুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। এরপর শঙ্খ, ঢাক, ঢোল বাজিয়ে ভক্তরা দেবীর প্রতিমা কাপ্তাই হ্রদে বিসর্জন দেন। ওই সময় ভক্তদের চোখের জল গড়ায় কাপ্তাই হ্রদে।
এবার শহরসহ রাঙ্গামাটি জেলায় ১৬টি পূজা মন্ডপ এবং ১০ উপজেলায় ৩০টি মন্ডপসহ মোট ৪৬টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। রাঙ্গামাটিতে রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ষষ্ঠীপুজার মধ্যদিয়ে শুরু এই ধর্মীয় মহাযজ্ঞ আর বৃহস্পতিবার বিকালে কাপ্তাই হ্রদে মহিসাসুরমর্দিনী দূর্গতিনাশিনী মা দেবীদূর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে।
ভক্তকূলের বিশ্বাস মতে, এবার দেবী মর্ত্যলোকে এসেছেন ঘোড়ায়, ফিরে গেছেন দোলায় চড়ে। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) মহালয়ার মধ্যদিয়ে শুরু দেবী আগমনের ডামাডোল। বৃহস্পতিবার বিকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে কাপ্তাই হ্রদে মা দেবীদূর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়।
প্রথা অনুযায়ী, প্রতিমা বিসর্জনের পর সেখান থেকে শান্তির জল মঙ্গলঘটে নিয়ে তা হৃদয়ে ধারণ করা হয়। আগামী বছর আবার এই শান্তির জল হৃদয় থেকে ঘটে, ঘট থেকে প্রতিমার সম্মুখে রেখে পূজা করা হবে।