রোয়াংছড়ির বাজারে গণশৌচাগার না থাকায় পর্যটক ও সাধারণ মানুষ ভোগান্তি চরমে

18

॥ রোয়াংছড়ি প্রতিনিধি ॥
বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে বাজারে গণ শৌচাগার (পাবলিক টয়লেট) না থাকায় পর্যটক ও স্থানীয় সাধারণ মানুষ ভোগান্তি চরমে। রোয়াংছড়ি উপজেলা প্রাকৃতিক সৌদর্য্য লীলাভূমি জনপ্রিয় পর্যটন নগরী নামে পরিচিত। এই উপজেলার প্রাকৃতিক রূপে সেঁজে আছে যেন নৈস্বর্গীয় রূপের প্রতিছবি শীলবান্ধা ঝর্ণা ও দেবতাকুম। ভ্রমণ পিপাসুদের প্রতি দিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজারও পর্যটক ছুটে আসেন সেখানে। রাজকন্যা রূপের সেজে থাকার জনপ্রিয় খ্যাত পর্যটন কেন্দ্র প্রাকৃতিক কন্যায় শীলবান্ধায় ঝর্ণার ও দেবতাকুম দর্শনে। কিন্তু দু:খের বিষয় হচ্ছে ইতিপূর্বে উপজেলা সদর প্রবেশ করলে সেখানে একটিও গণশৌচাগার না থাকায় দূর দুড়ান্ত থেকে ছুটে আসা প্রকৃতির প্রেমিক ও পর্যটকদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
এদিকে রোয়াংছড়ি উপজেলা ১৮ হাজার জন সাধারণ বসবাস ও একটি মাত্র বাজার হচ্ছে উপজেলা সদর এর বাজার উপর নির্ভরশীল এলকাবাসীদের। প্রতিদিন বাজারে এসে কৃষক উৎপাদিত পণ্য বেঁচা কেনা করেন এবং ব্যবসায়ী ও বেপারীদের দূর দুরান্তে থেকে এসে সে বাজারে কেনা বেঁচা করেন। এলাকার স্থানীয়রা প্রতিনিয়ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আসে। উপজেলা সদর হয়ে কোন গণশৌচাগার না থাকায় সংশ্লিষ্ট স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেক বছর হয়েছে কিন্তু একটি স্বাস্থ্য সম্মত গণশৌচাগার নাই। শুনেছি পূর্বে কয়েকটা গণশৌচাগার ছিল, সেটি মালিকানা হিসেবে দখল করে নিয়ে গেছে। সে ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে চাননি। যখন বাজারে আগমনকারীরা প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে গেলে চরম বিপাকে পড়তে হয়। তেমনি এলাকায় বাজারে স্থানীয় দুর্ভোগের স্বীকার হতে হয়। নাম বলতে অনিচ্ছুক বাজারে বাজারজাত করতে আসার স্থানীয়রা জানান আমাদের বলার কী আছে, আমাদের কথা তো কর্ণপাত করবে না। তাই কিছু বলতে চান না। আমরা দূরে থেকে এসে প্রতিনিয়ত নানান সমস্যা পোহাতে হয়েছে। মাঝে মাঝে নিজেদের পরিচিত মানুষের বাসায় গিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়তে হয়। যারা এই এলাকার অপরিচিতি তাহলে তাদের জন্য কোন কথা থাকে না। তারা অবশ্যই দুর্ভোগে ভুগবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়দের পাশাপাশ রোয়াংছড়িতে পর্যটন কেন্দ্রে হওয়ায় ভ্রমণ পিপাসুদের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে বেড়াতে আসার পর্যটকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এব্যাপারে পর্যটক ঢাকা থেকে আসার মো. বাকের আলী বলেন, একটু প্রশান্তির জন্য প্রাকৃতিক দৃশ্যে দেখতে আমরা সারাদিন গাড়িতে চরে পর্যটন এলাকায় আসি। বাজারে পৌঁছে দেখি দু:খের বিষয় একটিও গণ শৌচাগার নাই। দূর-দুরান্ত থেকে এসে প্রাকৃতি ডাকে সাড়া দিতে গেলে চরম লজ্জায় পড়তে হয়। নারী পর্যটককেরও একই অভিযোগ করেছেন, তারা বলেন পুরুষেরা যেখানে-সেখানে পায়খানা-প্রস্রাপ সাড়তে পারেন। নারীদের জন্য চরম বিপাকে পড়তে হয়। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ স্থানীয় জন সাধারণ অর্থাৎ মানুষের পাশাপাশি আমাদের পর্যটকদের কথা ভেবে দ্রুত এই বাজার এলাকায় গণ-শৌচাগার যেন স্থাপনে উদ্যোগ নেন।
রোয়াংছড়ি গাইড সমিটি সভাপতি চিংনুমং মারমা বলেন, রোয়াংছড়ি বাজারের একটি গণ-শৌচাগার বিশেষভাবে প্রয়োজন। অনেক দিন হচ্ছে কিন্ত এখানে কোন বাথরুম ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় প্রশাসন ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি দূর দুরান্ত থেকে আসার পর্যটকের জন্য উপকার হবে।
এ বিষয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান কাউছার বলেন, ইতিমধ্যে উদ্যোগ নিয়া হয়েছে। স্থানীয় ও পর্যটকদের সুবিধার্থে দ্রুত গণ শৌচাগার নির্মাণ হবে। সুধু তাই নয়, পর্যটকেন্দ্র দেবতাকুমকেও আরো দৃষ্টিনন্দন ও সুর্ন্দয বর্ধনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।