বান্দরবানে নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে) এর জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

10

॥ রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান ॥
“বাঁধা এলে তার মুখোমুখি দাঁড়াবো, আমাদের আছে অনন্ত শক্তির আধার, সাহস নিয়ে এগিয়ে চলো, আমরাও পারবো” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বান্দরবানে নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে) এর জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেমম্বর) সকালে বান্দরবানের পর্যটন মোটেলের হলরুমে বিএনকেএস, উৎস, ওডেব, সারা এবং নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে) যৌথ আয়োজনে এবং ডিয়াকোনিয়া বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় এই নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে) জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় অনলাইনে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালীভাবে যুক্ত হয়ে জাতীয় সম্মেলন এর শুভ উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে) এর আহবায়ক সুলতানা বেগম। এর পরে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ডিয়াকোনিয়া বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ম্যানেজার খোদেজা সুলতানা লোপা।
সম্মেলনে বান্দরবান প্রান্তে পর্যটন মোটেলের হলরুমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিনিয়া চাকমা। এসময় বিএনকেএস এর নির্বাহী পরিচালক হ্লাসিং নু, ওডেব, চট্টগ্রাম এর প্রধান নির্বাহী শ্যামলী মজুমদার, বিএনকেএস এর উপ-নির্বাহী পরিচালক উবানু মারমা, সমন্বয়কারী পারমিতা চাকমা, নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে) এর বান্দরবানের আহবায়ক নেমকিম বম, সদস্য সাইংসাইং এ সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নারী শুধু মায়ের নাম নয়, সে সাহস, শক্তি ও আত্মত্যাগের প্রতীক, নারী স্বাধীন হলে পরিবার এগোয়, সমাজ জাগে, দেশ বদলে যায়। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশি নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই সাফল্যের শিখরে উন্নীত হয়েছে। বিগত চার দশকে নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির, উন্নততর কর্ম প্রত্যাশা, উন্নত শিক্ষা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠা বা রক্ষার্থে নতুনত্ব আইন প্রণয়নও দেখা গেছে। যদিও বাংলাদেশের সমাজ এখনো পিতৃতান্ত্রিকই রয়ে গেছে। সামাজিক বঞ্চনা নিপীড়ন ও সহিংসতা প্রতিরোধ ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা পরিবর্তন, জেন্ডার সমতা ও নারীবাদী উদ্যম, সাহস এবং নতুনত্বের আকাঙক্ষা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রধান চালিকাশক্তি নারীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
ক্তারা এসময় আরো বলেন, তারপরও সাহস হারালে তো আর হবে না, বাঁধা এলে তার মুখোমুখি দাঁড়াবো, আমাদের আছে অনন্ত শক্তির আধার, সাহস নিয়ে এগিয়ে চলো, আমরাও পারবো” প্রতিপাদ্যটি যথাযথভাবে ভূমিকা রাখবে বলে বিশ^াস রাখি। নির্যাতন,সহিংসতার বিরুদ্ধে, বৈষম্যর বিরুদ্ধে, বাল্য বিয়ে বন্ধের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক বঞ্চনা নিপীড়ন ও সহিংসতা বিষয় বিবেচেনা নিয়ে মহয়সী নারী সুলতানা বেগম ২০০৪ সালের নেটওর্য়াকটির সূচনা করেছিলেন যার নাম নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে)।
এসময় বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিনিয়া চাকমা প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনকেএস, উৎস, ওডেব, সারা এবং নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে) যৌথ আয়োজনে এবং ডিয়াকোনিয়া বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় এই নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে) জাতীয় সম্মেলন বান্দরবানে আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, নারীদের পেছনে ফেলে কোন উন্নয়ন সম্ভব নয়। এসময় তিনি উপস্থিত সকল নারীকে আরো আত্মবিশ্বাসী হওয়া এবং দেশের প্রচলিত আইন ও সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে যুক্ত হতে আহবান জানান এবং যেকোন বিপদে পুলিশের সহায়তা নিতে অনুরোধ জানান।
নারী যোগাযোগ কেন্দ্র (এনজেকে) এর এবারের জাতীয় সম্মেলনে ঢাকা, বান্দরবান, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম জেলার ১১০জন নারীনেত্রী অংশগ্রহণ করেন। বর্ণাঢ্য আয়োজনে এই জাতীয় সম্মেলনে নারী নেত্রীরা তাদের বিভিন্ন অভিব্যাক্তি প্রকাশ করেন এবং দিনব্যাপী নানা আয়োজনে সফলভাবে সমাপ্ত হয় এই আয়োজন।