॥ থানচি প্রতিনিধি ॥
বান্দরবানের থানচি উপজেলা সদরে অবস্থিত থানচি বাজার (মডেল) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূর দূরত্ব কোমল মতি শিক্ষার্থীদের ৩ তলা আবাসিক ছাত্রাবাস ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাঁটল ধরেছে। ছাঁদ থেকে পানি পড়ে একটি কক্ষে থাকার অনুপযোগী হয়েছে। প্রতিদিনের ভয়ে আতঙ্কে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে ও থাকতে হচ্ছে ৭০ কোমল মতি শিক্ষার্থীরা। ফাঁটল ধরা অংশের সংস্কারের জন্য বারবার আবেদন করা হলে ও সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ দৃষ্টি গোচরে আনেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেচ্ছে, ২০১০-১১ সালে প্রাই ২২ কোটি টাকার ব্যয়ের বান্দরবান জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অর্থায়নের দরপত্র আহবানের মাধ্যমে সর্বনিন্ম দরদাতা হিসেবে বান্দরবানের বাসিন্দা ঠিকাদার আনিসুর রহমান (সূজন)কে ভবন নির্মান ও বাস্তবায়নের ঠিকাদার হিসেবে কার্যাদেশ দিয়েছিল।
তৎকালীন সময়ের থানচি উপজেলার অ-উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নির্মান সামগ্রী পরিবহনের অসুবিধা অজুহাতে স্থানীয় রড, সিমেন্ট, বালিরসহ নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী এবং অনভিজ্ঞ ও অপরিপক্ক নির্মান শ্রমিক ও মিস্ত্রী নিয়োগ করে তদারকি সাইট প্রকৌশলী ছাড়া ঠিকাদারের যা ইচ্ছা তা দিয়ে নির্মান করে যথা সময় সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেই। ২০১২ সালে ২২ এপ্রিল পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও বান্দরবানের সংসদ বীর বাহাদুর শুভ উদ্বোধন করে শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য উদ্মুক্ত করে দেন।
শিক্ষার্থীদের অভিবাবক হতে বাৎছরিক ১০-১২ হাজার খরচ তুলে থানচি বাজার (মডেল) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্যসাচিং মারমাকে আবাসিক ছাত্রাবাসের রক্ষনাবেক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের শৃংঙ্খলা ও পরিচালনা জন্য তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিয়োগ করে ২০১২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ১৪ বছর পর্যন্ত পরিচালনা করে আসছেন। গত ১৪ বছরে কোন প্রকার ভবনটি সংস্কার করা হয় নি বলে এই আশংকা দেখা দিয়েছে।
আবাসিক ছাত্রাবাসের ৫ম শ্রেনির শিক্ষার্থী উখ্যাইসিং মারমা, এম্যাচিং খিয়ান, ৪র্থ শ্রেনির লুশান ত্রিপুরা, তৃতীয় শ্রেনির ভেলি খুমি বলেন, ছাঁদ থেকে বৃষ্টি পড়ে, সৌচানাগারের দরজা ভেঙ্গে গেছে। সহপাঠিকে চৌকিদার রেখে মলমূত্র সরাইতে হয়। এছাড়া প্রথম তলায় সৌচাগার ভেঙ্গে দুর্গন্ধ ঠিক মতো ভাত খাওয়া যায় না। যে কোন মুহুর্থে ভেঙ্গে পড়া আশংকা করায় রাতে ঘুমাতে পারি না।
এ প্রতিবেদক সরেজমিনে গেলে থানচি উপজেলা পরিষদ হতে ৫০ গজের পশ্চিম দিকে থানচি বাজার (মডেল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমল মতি শিক্ষার্থীদের থাকার আবাসিক ছাত্রাবাসের অবস্থান। ছাত্রাবাসের প্রথম, ২য় ও তৃতীয় তলায় শিক্ষার্থীদের খাওয়ার রুম, রান্না ঘর রুম, সৌচানাগার নস্ট হয়েছে। ছাঁদ থেকে পানি পড়ে ভবনের অনেকাংশ ফাঁটল দেখা দিয়েছে এছাড়াও মরিচা ধরে থাকার পরিবেশ নেই বললে চলে।
আবাসিক শিক্ষক (খন্দকালীন নিয়োগ) উশৈমং মারমা বলেন, গত ২-৩ বছর যাবৎকাল শিক্ষক, শিক্ষারাথীরা দিনের বেলা বিদ্যালয়ের ক্লাসের রাতের বেলা যে কোন মুহুর্তে ভবন ভেঙ্গে পড়ার আশংকা থাকায় ঘুম হয় না, শুক্র ও শনিবার দুই দিন দিনের বেলা ঘুমাইতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক ও বাজার (মডেল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্যসাচিং মারমা বলেন, ভবন ফাঁটল, ছাঁদ হতে বৃষ্টি পড়ার, একটি রুম নষ্ট। ৮০ জন শিক্ষার্থী থাকার খাওয়ার তৎমধ্যে ৭০ জন রাখতে হয়েছে ১০ জনকে বঞ্চিত রাখতে হয়েছে। জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অনেকবার লিখিত মৌখিক জানিয়েছি। কিছু দিন আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ-আল-ফয়সাল ও এলজিইডি প্রকৌশলী পৃথকভাবে পরিদর্শন করে গেচ্ছেন তারা আশস্ত করেছেন সংস্কার করে দিবেন।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের লামা উপজেলা প্রকৌশলী থানচি অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত মো: আবু হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে জুন মাসের শেষ দিকে থানচি উপজেলা অ: দা: দায়িত্ব দিয়েছে আমি আবাসিক ছাত্রাবাসের পরিদর্শন করেছি এবং আমাদের সহকারী প্রকৌশলী মো: জাকের হোসেনকে প্রাক্কলন করে শ্রীগরই জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছি এবং আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি প্রাক্কলন পেলে চলতি বছরের মধ্যে প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ নিয়ে দরপত্র আহবানের মাধ্যমে সংস্কার করা হবে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ-আল-ফয়সাল সাংবাদিকদের বলেন, ইতিমধ্যে আমি সরেজমিনের দেখেছি যেভাবে পারি চলতি বছরের মধ্যে সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহন করার হবে।