বান্দরবানে পাহাড় কাটার অপরাধে ভেকু ডাম্প ট্রাকসহ আটক-১

3

॥ বিশেষ প্রতিনিধি, বান্দরবান ॥
বান্দরবানে পাহাড় কাটার অপরাধে ভেকু ও ডাম্প ট্রাকসহ মোহাম্মদ ফারুক (৪৬) নামে এক ব্যাক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। একই ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে একাধিক সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দিন গত রাতে বান্দরবান সদর উপজেলার বালাঘাটা লেমুঝিরি এলাকায় এঘটনা ঘটে। আটক মোহাম্মদ ফারুক (৪৬) বান্দরবান পৌরসভার ২ নাম্বার ওয়ার্ডের বাজার এলাকার মৃত বদিউর রহমানের ছেলে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ ফারুক, মো. মামুন ও আলী মিয়ার নেতৃত্বে দীর্ঘ দিন ধরে বালাঘাটা লেমুঝিরির লক্ষীপদ দাসের গোধা এলাকায় রাতের আধারে স্থানীয় প্রজ্ঞাসার বড়ুয়া পাপনের পাহাড় থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছিল। ওয়ার্ড বিএনপির নেতা পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তার করায় ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না স্থানীয়রা। এরই মধ্যে ওই পাহাড় কেটে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্তত লক্ষাধিক ঘনফুট মাটি। এনিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন জেলা পর্যায়ের একাধিক স্থানীয় সংবাদকর্মী। পরে এঘটনায় বান্দরবান সদর থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে উপস্তিত পাহাড় কাটায় ব্যবহৃত একটি ভেকু, একটি ডাম্পার ট্রাক ও অপর একটি ডাম্পার ট্রাকের ডকুমেন্ট জব্ধ করেন। এসময় পাহাড় কাটায় জড়িত ও সংবাদ কর্মীদের ওপর হামলাকারি মোহাম্মদ ফারুককে আটক করা হয়।
এবিষয়ে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি ফারুক আহম্মেদ জানান, অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটার সংবাদ পেয়ে স্থানীয় আরও ১১ জন স্থানীয় সাংবাদিকের সঙ্গে তিনিও লেমুঝিরি এলাকায় তথ্য সংগ্রহে যান। সেখানে কথিত ওয়ার্ড বিএনপির নেতা পরিচয়ে উপস্থিত সকল সাংবাদিককে তথ্য সংগ্রহে বাধা প্রদান করে পাহাড় খেকোরা। ওই সময় তথ্য সংগ্রহে বাধা প্রদানের প্রতিবাদ করায় পাহাড় খেকো মোহাম্মদ ফারুক গংরা সাংবাদিক ফারুক আহম্মেদ’সহ অপর এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায়।
এদিকে, অপরাধ কর্মকান্ডের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বান্দরবানে কর্মরত সিনিয়র সাংবাদিকরা। তারা এ ঘটনায় জড়িত সকলকে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানান।
এবিষয়ে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম জানান, লেমু ঝিরি এলাকায় পাহাড় কাটার ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তর বাদি হয়ে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
বান্দরবান পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, বালাঘাটা নির্মাণাধীন উপ-বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমি ভরাট করতে ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি করে নাজিম উদ্দীন নামের এক ব্যাক্তি। জমিটি ভরাট করতে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ও নদীর চর কাটার অপরাধে দুই বার ভ্রাম্যণ আদালত তাকে দন্ড প্রদান করেন। পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আরও দুইটি মামলা দায়ের করা হয় তার বিরুদ্ধে।