আলীকদমে উপজাতি গৃহবধুর রহস্য মৃত্যু: শয়ন কক্ষ থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

8

॥ হাসান মাহমুদ, আলীকদম ॥
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা ৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাবুপাড়ায় এক উপজাতি গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে আলীকদম থানা পুলিশ। নিহত ব্যক্তি উপজেলার বাবুপাড়ার ক্যমাং মার্মা’র কন্যা ও রিহ্লা মার্মার স্ত্রী উমেনুং মার্মানী (৩২)।
সোমবার (২৩ জুন) সকালে তার বসতঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আলীকদম থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। আলীকদম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন এবং ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তবে এই নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে ঘুমিয়ে পড়েন উমেনুং মার্মানী। তার স্বামী রিহ্লা মার্মা (৪২) বাঁশ কাটার কাজে পাহাড়ে গিয়েছিলেন। সোমবার সকাল ৮টার দিকে প্রতিবেশিরা উমেনুং মার্মানীকে ঘুম থেকে ডাকার জন্য গিয়ে দেখেন, তিনি ঘরের বাঁশের বিম এর সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় দরজা ভেঙে তার মরদেহ নিচে নামানো হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিহত উমেনুং মার্মানী এবং তার স্বামী দুজনেই মাদকাসক্ত ছিলেন। ঘটনার রাতে উমেনুং মার্মানী প্রচুর মদ্যপান করেছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন উমেনুং মার্মানী। তার স্বামী রিহ্লা মার্মা তেমন কোনো কাজ করতেন না এবং উপার্জনের একটি বড় অংশ মদ্যপানে ব্যয় করতেন। এই আর্থিক দৈন্যদশা এবং পারিবারিক সমস্যার কারণে উমেনুং মার্মানী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।
হত্যা না আত্মহত্যা:
এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে কথা বলেছিলাম এই পাড়ার বেশ কিছু লোকজনের সাথে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সূত্র থেকে জানায়, এটা আত্মহত্যা হতে পারেনা। ওই পরিবারে দেশীয় চোলাই মদ উৎপাদন করা হয়। বিভিন্ন লোকজন মদ পান করার জন্য আসে। তাছাড়া মৃত ব্যক্তির সাথে একই পরিবারে বসবাস করতেন তাহার স্বামী রিহ্লা মার্মার ভাই ও তার পরিবার। বিভিন্ন সময়ে উভয় পরিবারের মধ্যে নানা বিষয়ে দ্বন্দ সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। ইতোপূর্বে উভয় পরিমারের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারির মত ঘটনাও ঘটেছে। তারই জের ধরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। এছাড়াও বিভিন্ন পারিপার্শিক কারণে এটাকে আত্মহত্যা বলে মনে হয়না।