লামায় স্বামীকে অপহরণের ঘটনায় লামা থানায় স্ত্রীর অভিযোগ দায়ের

8

॥ লামা প্রতিনিধি ॥
বান্দরবানের লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নে তুলে নিয়ে অপহরণের পর পৈশাচিক নির্যাতনের পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনা ঘটেছে। গত ৮ জুন ২০২৫ তারিখে মোছাঃ মাইমুনা বেগম (২৪)-এর স্বামী আলমগীরকে অপহরণ করে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনায় স্ত্রী মাইমুনা বেগম লামা থানায় ১০ জুন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লামা থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ এনামুল হক ভুইয়া জানিয়েছেন, অভিযোগটি পাওয়ার পর তা তদন্তের জন্য গজালিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠানো হয়েছে জানান।
মাইমুনা বেগমের অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, গত ৮জুন ২০২৫ইং তারিখ রাত আনুমানিক ৭ ঘটিকায় লামা থানাধীন ১নং গজালিয়া ইউপির ৭নং ওয়ার্ডস্থ পুকুরিয়া খোলা এলাকায় পান বেপারী দেলোয়ার হোসেনের চায়ের দোকান থেকে তার স্বামী আলমগীরকে অপহরণ করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন মাহিন, নেজাম উদ্দিন, রিয়াজ উদ্দিন (মোটর সাইকেল চালক) এবং আরও ৪/৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি।
অভিযোগকারী জানান, মাহিন একসময় তাদের বাড়িতে কাজ করতেন এবং তার মাসিক বেতন ছিল ৮ হাজার টাকা। সাত মাসের বেতন বাবদ ৫৬ হাজার টাকার মধ্যে তার স্বামী ৫১ হাজার টাকা পরিশোধ করে দিয়েছেন। কিন্তু মাহিন বর্তমানে ১০ হাজার টাকা করে দাবি করে আরও ১৯ হাজার টাকা অযাচিতভাবে দাবি করছেন।মাইমুনা বেগম আরও অভিযোগ করেন যে, ৩০/০৪/২০২৫ইং তারিখে মাহিন তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এই বিষয়টি জানাজানি হলে মাহিন তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং তার ক্ষতি করার বিভিন্ন চেষ্টা চালান। বেতন সংক্রান্ত বিরোধ ও শ্লীলতাহানির বিষয়ের জের ধরে অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে তাদের স্বামীকে অপহরণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি অভিযোগ অনুযায়ী, গত ০৮/০৬/২০২৫ইং তারিখে অভিযুক্তরা আলমগীরকে আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যাবে বলে মোটরসাইকেল যোগে তুলে নিয়ে যায়। সেই থেকে মাইমুনা বেগম তার স্বামীর কোনো খোঁজ পাননি, তার স্বামীর মোবাইল নাম্বার ও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরপর ০৯/০৬/২০২৫ইং তারিখ ভোরে ০১৮৭১৯৩৬৪৫৬ নম্বর থেকে মাইমুনা বেগমকে ফোন করে তার স্বামীর মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়।
ওইদিন সকাল ৯:০০ ঘটিকায় স্থানীয় আর্মি ক্যাম্পে গিয়ে মাইমুনা বেগম জানতে পারেন যে, তার স্বামীকে ০৮/০৬/২০২৫ইং তারিখ রাত আনুমানিক ০৯:২০ ঘটিকায় অভিযুক্ত নেজাম উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও আলমগীর বাড়িতে ফিরে আসেননি। মাইমুনা বেগম আশঙ্কা করছেন যে, অভিযুক্তরা তার অপহৃত স্বামীকে হত্যা করে লাশ গুম করতে পারে। অপহরণের ৩৬ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও স্বামীকে না পাওয়ায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা উল্টো হুমকি দিচ্ছে বলে মাইমুনা বেগম জানিয়েছেন। লামা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এনামুল হক ভুইয়া জানিয়েছেন, “অভিযোগটি আজকে পেয়েছি, গজালিয়া পুলিশ ফাঁড়িকে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।”এই ঘটনার পর থেকে মাইমুনা বেগম তার তিন সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি তার স্বামীকে দ্রুত উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন। স্থানীয়দের মধ্যে এ ঘটনায় উদ্বেগ ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।