॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটিতে শেষ মুর্হুতে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। আসন্ন ‘কোরবানির ঈদ’কে সামনে রেখে রাঙ্গামাটির পাহাড় থেকে শতশত গরু আনা হয়েছে সমতলে। পাহাড়ি গরুগুলোও স্বাভাবিক ভাবে মোটাতাজা এবং সুস্থ। এসব গরুকে কোন কৃত্রিম ওষুধ প্রয়োগে মোটা করা হয় না। তাই সহজেই ক্রেতাদের মন কাড়ছে রাঙ্গামাটির কোরবানি পশুর হাটে ওঠা এসব পাহাড়ি গরু। প্রতিদিন শত শত গরু যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। বিশেষ করে পাহাড়ি লাল বিরিষ গরুর চাহিদা তুঙ্গে। ফলে এসব গরুর চাহিদাও ব্যাপক।
রাঙ্গামাটি শহরের পৌর ট্রাক টার্মিনালে কোরবানী পশুর হাট স্থাপন করেছে পৌরসভা। রাঙ্গামাটির বরকল, লংগদু, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর উপজেলাসহ প্রভৃতি এলাকা থেকে কাপ্তাই হ্রদের নৌ পথ দিয়ে প্রতিদিন ইঞ্জিন নৌকা ভর্তি করে পাহাড়ি গরু কোরবানী পশুর হাটে আসতে শুরু করেছে বেশ কদিন ধরে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলো থেকে কম দামে গরু এনে ভালো লাভে বিক্রি করার সুযোগ থাকায় অনেক গরু ব্যবসায়ী পাহাড়ি গরু সংগ্রহ করছেন। আর সেগুলো ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন সমতলের বিভিন্ন হাটবাজারে। কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসতেই রাঙ্গামাটির লাল বিরিষ গরুর চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। আর গত বছরের ন্যায় এ বছর ছোট, বড়, মাঝারি সব গরুর দাম প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাঙ্গামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ট্রাক টার্মিনালে, সড়কে অবৈধ টোল বা চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই ব্যাপারে আমরা তৎপর আছি।
রাঙ্গামাটি উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রতন কুমার দে জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও রাঙ্গামাটি জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ জেলার ১৯টি কোরবানি পশুর হাটে মেডিক্যাল টিমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাথে সাথে ১০ উপজেলার হাটবাজারে গরু-ছাগল উঠবে সেখানেও আমাদের উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তরের মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সেবা দেয়া যায় তা দেয়া হচ্ছে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তুষার কান্তি চাকমা জানান, কোন ধরনের মোটা-তাজাকরণ ওষুধ ছাড়াই পাহাড়ি এসব গরু বনে পাহাড়ে স্বাধীনভাবে বেড়ে ওঠায় দেখতে বেশ হৃষ্টপুষ্ট। তাই এইসব গরু ব্যাপকভাবে আসতে থাকায় বাজারে কোরবানির পশুর কোন সঙ্কট তৈরি হবে না। তিনি আরো বলেন, এবছর ১০ উপজেলায় ৬৮ হাজার ৮শত ৬৫টি গবাদিপশু উৎপাদিত অবস্থায় আছে এবং রাঙ্গামাটি জেলায় চাহিদা হচ্ছে ৬২ হাজার ৮শত ৮২টি। আশা করি এ বছর উবৃত্ত হবে ৫ হাজার ৯শত ৮৩টি গবাদিপশু। ব্যবসায়ীরা যদি আমাদের এখান থেকে অন্যান্য জেলায়ও গবাদিপশু যদি নিয়ে যায় তাহলে আমরা রাঙ্গামাটির গবাদিপশু সরবরাহ করতে পারবো।
দেশের এই পাহাড়ি অঞ্চলে প্রচুর গরু পালন করা যায়। আর তা দিয়েই দেশে ঘাটতির অনেকাংশে পূরণ সম্ভব। কিন্তু এই খাতের উন্নয়নে কেউ এগিয়ে আসছে না। এই জন্য খামারীদের ঋণ দিতে এবং ভালো জাতের গরু সরবরাহ করতে সরকারী ভাবে উদ্যোগে নেয়া গেলে এই ব্যবসা আরও প্রসারিত হবে, লাভবান হবেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-দুপক্ষই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।