খাগড়াছড়িতে নদীর স্রোতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ-২, লাশ উদ্ধার, আর্থিক সহায়তা প্রদান

14

॥ দীঘিনালা ও লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি ॥
টানা ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি জেলায় পাহাড় ধস ও নদীর পানির প্রবল স্রোতে ভেসে গিয়ে দুইজন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে দুইজনের লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
শুক্রবার (৩০ মে) সকালে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বিজয় কার্বারী পাড়ার ধরুং খালে মাছ ধরতে গিয়ে পানির প্রবল স্রোতে ভেসে যান উক্রাচিং মারমা (১৭)। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
অন্যদিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মাইনি নদীতে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে তরতিৎ চাকমা (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নদীর পানির স্রোতে ভেসে যান। নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘন্টা পর বৃদ্ধার মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (৩০মে) বিকালে রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি টিম এসে মাইনী নদীতে উদ্ধার কাজ শুরু করেন শনিবার (৩১ মে) সকালে বাবুছড়া ইউনিয়ন থেকে ৩কিলোমিটার দুরে নোয়াপাড়া এলাকা থেকে তরিৎ চাকমার মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়।
দীঘিনালা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ জাকারিয়া বলেন, নিখোঁজ তরিৎ চাকমার মৃত দেহ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি টিম উদ্ধার করেছে। থানায় একটা অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। মৃতদেহ পরিবারের সদস্য কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গগন বিকাশ চাকমা বলেন, ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি সদস্যরা উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে ২৪ ঘন্টা মধ্যে নিখোঁজ তরিৎ চাকমার মৃতদেহ উদ্ধার করে।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত কুমার সাহা তরিৎ চাকমার বাড়িতে গিয়ে দাহক্রিয়া সম্পন্ন করা জন্য ২৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। অন্যদিকে, লক্ষ্মীছড়িতে নিহত উক্রাচিং মারমার পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেটু কুমার বড়ুয়া।
দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা পংকজ বড়ুয়া বলেন, রাঙ্গামাটি থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি টিম ও দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় নিখোঁজ তরিৎ চাকমার মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে খাগড়াছড়ি শহর ও আশপাশের এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকে জেলা প্রশাসন কার্যক্রম শুরু করে। শালবনসহ শহরের বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে তৎপর রয়েছে প্রশাসন। মাঠ পর্যায়ে উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ এবং যুব রেডক্রিসেন্ট সদস্যরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক অবস্থানে থাকার এবং প্রয়োজন হলে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।