॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির ফলে রাঙ্গামাটির পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত বাসিন্দাদের জন্য আতংক সৃষ্টি করেছে। যেকোনো মুহূর্তে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটতে পারে। হতে পারে ভয়াবহ হতাহতের ঘটনা। তাই বৃষ্টি হলেই পাহাড়ের নিচে বসবাসরত মানুষের মনে আতংক দেখা দেয়।
আর কয়েকদিনের বৃষ্টি স্থায়ীত্ব হওয়ায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্কতা জারি করেছে এবং সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে গেলে বাসিন্দারা যেন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছেড়ে দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে পাহাড়ি ভূমিধস রোধ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশেষ সচেতনতামূলক অভিযান পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মারুফের নির্দেশক্রমে উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো: মোবারক হোসেন রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার ভেদভেদী এলাকার শিমুলতলি ও লোকনাথ মন্দির সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি স্থানসমূহ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বৃষ্টির পরিমাণ যদি বৃদ্ধি পায় তা হলে দেরী না করে দ্রুত সময়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাসিন্দাদের অনুরোধ জানান।
পরিদর্শনকালে তিনি এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন এবং পাহাড় ধসে সম্ভাব্য বিপদের বিষয়ে সবাইকে অবহিত করেন। পাশাপাশি তিনি সচেতনতা ও সতর্কতা অবলম্বনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং পাহাড়ি এলাকায় পরিকল্পনাহীন নির্মাণ ও বৃক্ষনিধনের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো: মোবারক হোসেন বলেন, ভূমিক্ষয় পার্বত্য এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি বড় হুমকি। এর থেকে সৃষ্ট ভূমিধস মানুষের জানমালের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং পাহাড় রক্ষা ও নিরাপদ বসবাস নিশ্চিত করতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আর রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন ভবিষ্যতেও এই ধরনের সচেতনতামূলক অভিযান ও প্রচারণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলে জানান তিনি। বৃষ্টি যতদিন থাকবে প্রশাসন ততদিন এই ধরণের সতর্কতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তবে বৃষ্টি দীর্ঘ মেয়াদী স্থায়ী হলে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সরকার একাধিকবার তাদের পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সরানোর চেষ্টা করলের তাদের জন্য স্থায়ী আবাসস্থলের ব্যবস্থা করতে না পারায় এই সমস্যা দীর্ঘ বছর থেকে গেছে। বর্ষাকাল আসলে পাহাড় ধসের ঘটনায় মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়। জেলায় ২০১৭ সালে পাহাড় ধসে সরকারি হিসেবে ১২০ জনের প্রাণহানী ঘটেছিল। তবে বেসরকারি ভাবে হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি ছিল। এরপর ২০১৮সালেও পাহাড় ধসে জেলার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে বসবাসরত ১১জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। মূলত এ ধরনের প্রাণহানির ঘটনা এড়াতে প্রশাসন অগ্রিম সতর্কমূলক প্রচারণা চালাতে শুরু করেছে।