॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো আগামী ১৬ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য আর্ন্তজাতিক কনফারেন্স এন্ড বায়োসায়েন্স কার্নিভাল (আইসিবিসি) এর সামগ্রিক বিষয়াদি ও প্রস্তুতি অবহিত করতে মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় আইসিবিসি মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন উপ-কমিটির উদ্যোগে রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স কক্ষে মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠিত হয়।
রাবিপ্রবি’র ভাইস-চ্যান্সেলর ও আইসিবিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দকে আগামী ১৬, ১৭ ও ১৮ মে অনুষ্ঠিতব্য তিনদিনব্যাপী আর্ন্তজাতিক কনফারেন্স এন্ড বায়োসায়েন্স কার্নিভাল এর প্রোগ্রামসূচি ও কনফারেন্সের লক্ষ্যে-উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
ভাইস-চ্যান্সেলর সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তার এগার বছরের পথচলায় এক ইতিহাস তৈরীর সন্ধিক্ষণে উপনীত। শুধু রাবিপ্রবি নয় বরং গোটা পাহাড়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাঙ্গামাটিতে আয়োজিত হতে যাচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং জীববিজ্ঞান কার্নিভাল ২০২৫’। যার মূল আয়োজনে রাবিপ্রবির সাথে থাকছে বাংলাদেশ জৈব নিরাপত্তা ও জৈব নিরাপত্তা সমিতি। আমাদের এ মহৎ প্রয়াস বিষয়ে আপনাদেরকে অবহিতকরণ এবং আপনাদের মাধ্যমে তা সমাজের নানান অংশীজনের সাথে অবহিত করাই আজকের এই মিট দ্যা প্রেসে’র মূল লক্ষ্য।
তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক কনফারেন্স এন্ড বায়োসায়েন্স কার্নিভালে প্রায় ৩৫০ এর অধিক বিজ্ঞানী এবং গবেষকগণ তাদের গবেষণাপত্র উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন। তরুণ বিজ্ঞানীরা উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন নতুন নতুন গবেষণা আইডিয়া এবং বাংলাদেশে বিজ্ঞান উন্নতিকল্পে থাকছে বিজ্ঞান বিতর্ক। সম্মেলনের প্রথমদিন ১৬ মে দুপুর দেড়টায় রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন এবং একই মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সম্মানিত সদস্য, বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো ও বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মোঃ সাইদুর রহমান। এছাড়াও তিনদিনব্যাপী সম্মেলনে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (প্রাক্তন বিএসএমএমইউ) সম্মানিত উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহিনুল আলমসহ বাংলাদেশের স্বনামধন্য আরো ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপাচার্যগণ উপস্থিত থাকবেন। তিনি এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ও বায়োসায়েন্স কার্নিভ্যাল যাতে সফল ভাবে সম্পন্ন করা যায় তার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহসহ সকলকে সার্বিক সহযোগিতার আহবান জানান।
“জৈববিজ্ঞান, জৈব নিরাপত্তা এবং জৈব নিরাপত্তায় উদ্ভাবন এবং সহযোগিতা: একটি টেকসই স্বাস্থ্যসেবা এবং কৃষি দৃষ্টিভঙ্গির সন্ধান” বিষয়ক প্রতিপাদ্যকে ঘিরে আয়োজিত এই কনফারেন্সের প্লেনারী সেশনে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট জীন বিজ্ঞানী ও বহুব্রীহি ধানের আবিষ্কারক ড. আবেদ চৌধুরী, আইসিডিডিআরবি’র বায়োসেফটি প্রধান ড. আসাদুলগণি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের স্বনামধন্য অধ্যাপক ড. মুনিরা আহসান। উদ্বোধনী দিনে “সাইন্স পলিসি ডায়ালগ” বিষয়ে আরো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেশন অনুষ্ঠিত হবে। যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিজ্ঞান গবেষণায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা, দেশের নানামাত্রিক উন্নয়নে ও সমস্যা সমাধানে প্রায়োগিক গবেষণার প্রসার এবং গবেষণায় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে সরাসরি সম্পৃক্তকরণ বিষয়ে মতামত গ্রহণ ও সুপারিশ প্রস্তুতকরণ।
কনফারেন্সের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে ইনোভেশন বিষয়ে বাংলাদেশে যে গবেষণা হচ্ছে সেগুলোর ফলাফল উপস্থাপন ও তার প্রায়োগিক সম্ভাবনা বিষয়ক গবেষণাসমূহ উপস্থাপন করা হবে। নতুন বিজ্ঞানীদের সম্পৃক্ত করার এ মিশনে ওরাল এবং পোস্টার প্রেজেন্টেশন ছাড়াও নবীন বিজ্ঞানীদের জন্য থাকছে বায়োসায়েন্স কার্নিভাল- যেটিকে রিসার্চ আইডিয়া, ৩ মিনিট প্রেজেন্টেশন, ডিবেট ফর সায়েন্সের মতো অনবদ্য এবং আকর্ষণীয় ইভেন্ট দিয়ে সাজানো হয়েছে। এছাড়াও পাহাড়ে দীর্ঘ বছর ধরে চলা দেশজ চিকিৎসার সাথে যুক্ত ট্রেডিশনাল চিকিৎসকদের গল্পও থাকছে কার্নিভালে। তিনি আরো বলেন, এ কনফারেন্সের মাধ্যমে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন ছাড়াও রাবিপ্রবির সাথে বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের একটি শক্ত কলাবোরেশনও গড়ে উঠবে এবং একই সাথে রাবিপ্রবি পাবে এক নতুন উচ্চতা দেশে ও বিদেশে।
তিনি মিডিয়া পার্টনার হিসেবে যেসকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ইতিমধ্যে কার্নিভালে যুক্ত থাকার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি আরো ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এসকো বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, পার্কভিউ হাসপাতালসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে যারা এ আয়োজনের সাথে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি সম্পদ ও সম্ভাবনার এই বাংলাদেশ, বিশ্বের দরবারে নতুন আঙ্গিকে মাথা তুলে দাঁড়াবার এই সময়ে সাংবাদিকসহ সকল অংশীজনকে রাবিপ্রবির সাথে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আহবান জানান।
প্রেস কনফারেন্সে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন জনাব সূচনা আখতার, সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন ধীমান শর্মা, প্রক্টর ও ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদ্দাম হোসেন, ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক ড. নিখিল চাকমা, ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুপ্রিয় চাকমা এবং রাঙ্গামাটিস্থ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।