লামায় আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির অফিস ডাকাতি, ১ কোটি ৭২ লাখ টাকা লুট

32

॥ লামা প্রতিনিধি ॥
বান্দরবানের লামা উপজেলার লাইনঝিরি এলাকায় অবস্থিত আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেডের তামাক ক্রয় কেন্দ্রের অফিসে দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৯ মে) ভোর রাতে ১৫/২০ জনের সশস্ত্র ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে হিসাবরক্ষক সহ অন্যদের জিম্মি করে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। লকারে (বোল্ট) থাকার কারণে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ডাকাতের হাত রক্ষা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন।
আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিঃ লামা জোন ইনচার্জ আব্দুর রব জানিয়েছেন, অফিসে তামাক ক্রয়ের জন্য প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা মজুদ ছিল। কোম্পানির অফিসে একটি বোল্ট লক হয়ে যাওয়ার কারণে ডাকাত দল লকারে থাকা ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা লুট করতে পারেনি। ঘটনার পরপরই কোম্পানীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগন ও ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে আসা উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা ছিনতাই হওয়া টাকার পরিমাণ নিরুপম করতে কাজ করে। সকাল থেকে চেষ্টা করে রাত ৭টায় লকার খোলার পর প্রকৃত টাকার হিসাব পাওয়া যায়। এদিকে সকাল থেকে ঘটনাস্থলে র‌্যাব, পুলিশ সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন অবস্থান করে।
লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন জানান, পুলিশ ও র‌্যাবের উপস্থিতিতে টাকার বোল্ট খোলা হয়েছে। হিসাব মতে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ টাকা লুট হয়েছে। লকার ভাংতে না পারায় ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা নিরাপদ ছিল। এতবড় অংকের নগদ টাকা থাকার পরেও আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির লোকজন থানাকে অবহিত করেনি। আমাদের জানালে অবশ্যই আমরা নিরাপত্তা দেয়ার ব্যবস্থা করতাম। ছিনতাই হওয়া টাকার বিষয়ে উদ্ধারে কাজ করছে থানা পুলিশ। থানা পুলিশের ১টি টিম এবং র‌্যাব-১৫ বান্দরবানের একটি টিম ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। হারানো টাকার বিষয়ে কোম্পানির প্রতিনিধি থানায় মামলা করেছেন।
আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড লামা জোন ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রব আরো জানান, ডাকাতের হামলায় হিসাবরক্ষক মোঃ জহিরুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
সকাল থেকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, র‌্যাব-১৫ বান্দরবান ক্যাম্পের এডিশনাল এসপি (সিবিসি-৩) আবুল কালাম আজাদ, আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেডের ডিরেক্টর অব ফাইন্যান্স এন্ড একাউন্ট ইকবাল আনোয়ার, সিনিয়র জেনারেল ম্যানাজার (ডিজিএম) কামরুল ইসলাম, লামা সার্কেল এর সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন।
এই ঘটনায় কিছু বিষয় জনমনে প্রশ্ন তুলেছে। জানা যায়, আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড এর দায়িত্বরত লোকজন বৃহস্পতিবার ১ কোটি ১০ লাখ টাকা লামা ইসলামী ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিরাপত্তা ব্যাতিত টমটম করে লাইনঝিরি অফিসে নিয়ে যায়। এছাড়া প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা নগদ মজুদ রাখলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবিষয়ে অবগত ছিলনা। ঘটনার সময় অফিসের পাশে তামাক ক্রয় কাজে নিয়োজিত ৩৯ জন শ্রমিক ছিল এবং ২০ গজের মধ্যে লাইনঝিরি মোড়ে টহল পুলিশ অবস্থান করছিল। এতবড় একটি অফিসে ছিলনা কোন সিসি ক্যামেরা ব্যবস্থা। দুইজন নাইটগার্ড থাকার কথা থাকলেও ঘটনার সময় ১ জন অনুপস্থিত ছিল। রাত ৩টা ৩৯ মিনিটে লামা থানা পুলিশের গাড়ি লাইনঝিরি থেকে ঘটনাস্থলের সনামনে দিয়ে লামা বাজারে মুভ করে। সবমিলে ঘটনাটির বিষয়ে নানান প্রশ্নের উঁকি দিয়েছে জনমনে।