॥ কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই ॥
কাপ্তাই চট্টগ্রাম সড়কের পাশে লিচুবাগান এলাকায় উন্মুক্ত স্থানে প্রতিদিন শতশত পরিবার গৃহস্থালী যাবতীয় ময়ল আবর্জনা ফেলছেন। শুধু গৃহস্থালী আবর্জনা নয় স্থানীয় সকল হোটেলের ময়লা এবং উচ্ছিষ্টও সড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে। লিচুবাগানে রয়েছে অনেক গুলো মুরগি বিক্রির দোকান। এসব মুরগির দোকানে প্রতিদিন শতশত মুরগি বিক্রি হয়। সকল ক্রেতা দোকানে মুরগি জবাই করার পর পরিস্কার করে নিয়েযান। মুরগির নাড়িভুড়ি এবং অন্যান্য যাবতীয় ময়লাও সরাসরি সড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সমগ্র এলাকা দুর্গন্ধময় হয়ে পড়ছে। আবর্জনা পুরো এলাকা ছড়িয়ে পড়েছে। চরম দুর্গন্ধে ঐ এলাকা দিয়ে যাতায়াত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে লিচুবাগানে অবস্থতি চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতাল পরিচালিত কুষ্ঠ হাসপাতালের সামনের গেইট থেকে সর্বত্র শতশত দোকানপাট গড়ে উঠেছে। হাসপাতালের দেওয়াল ঘেঁষেই বসেছে মাছের বাজার। লিচুবাগান এলাকায় শতশত ব্যবসায়ী এবং শতশত পরিবার বসবাস করছেন। প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং প্রতি পরিবারে প্রতিদিনই ময়লা আবর্জনা জমা হচ্ছে। সবাই নির্দ্বিধায় যাবতীয় ময়লা আবর্জনা ফেলছেন কাপ্তাই সড়কের উভয় পাশে উন্মুক্ত স্থানে। কাপ্তাই চট্টগ্রাম সড়কের প্রায় ৫শ ফুট পরিমান জায়গায় এভাবে প্রকাশ্যে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক পারুল আক্তার জানান, প্রতিদিন সকাল বিকাল এই সড়কের সামনে দিয়ে আমাদের যাতায়াত রতে হচ্ছে। ময়লা আবর্জনা এমনভাবে ফেলা হয়েছে যে আমরা পায়ে হেঁেটও যেতে পারছিনা। সড়কের দুই পাশে কোন ফুটপাথ নেই। সব ময়লা আবর্জনার দখলে। এই স্থান দিয়ে দুর্গন্ধে নাকে রুমাল দিয়েও যাতায়ত করতে পারছিনা। প্রশাসনের কোন নজরদারি না থায় যার যেভাবে ইচ্ছা সড়কের আশেপাশে ময়লা আবর্জনা ফেলছেন।
সড়কের পাশেই অবস্থিত রাইজিং সান কেজি এন্ড হাই স্কুল। এই স্কুলের শিক্ষার্থী মোঃ জহিরুল ইসলাম, মাহমুদ হাসান এবং শিউলী বেগম জানায়, শুস্ক মাউসুমে কোন রকমে সড়কের পাশ দিয়ে যাতায়াত করতে পারলেও বৃষ্টির সময় আমাদের চরম বিপাকে পড়তে হয়। এই সড়কের উপর দিয়ে সারাক্ষন অসংখ্য ছোটবড় যানবাহন যাতায়াত করে। ময়লা আবর্জনার জন্য ফুটপাত না থাকায় অত্যন্ত ভয় ও ঝুঁকি নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে। ছাত্ররা জানায় প্রশাসন এখানে বড় একটি দুর্ঘটনা ঘটার অপেক্ষায় আছে। দুর্ঘটনায় কোন শিক্ষার্থী বা অন্য কেউ মারা গেলে তখন এই দুরবস্থা দুর হবে। তার আগে এখানে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেবে বলে মনে হয়না।
লিচুবাগানে কাপ্তাই সড়কের পাশে প্রতিদিন ময়লা আবর্জনা ফেলছেন স্বীকার করে স্থানীয় ব্যবসায়ী আমজাদ হসে বলেন, লিচুবাগান এলাকায় ব্যবসায়ীসহ কয়েক হাজার পরিবারের বসতি রয়েছে। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং পরিবারে অবশ্যই প্রতিদিন ময়লা আবর্জনা হচ্ছে। কিন্তু এগুলো ফেলার কোন নিদৃষ্ট জায়গা নেই। তাই মানুষ বাধ্য হয়ে সড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা ফলছেন। লিচুবাগান এলাকার বহুতল ভবনের বাসিন্দা খোদেজা আক্তার বলেন, ময়লা আবর্জনা শুধু যে সড়কের পরিবেশ নষ্ট করছে তা নয়। এসব ময়লা আবর্জনা পঁচে গলে এবং বিভিন্নভাবে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। এরফলে নদীর পানিও দূষিত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য কয়েকটি স্থান নিদৃষ্ট করে দেওয়া হোক। এবং প্রশাসনের উদ্যোগে নিয়মিত এসব আবর্জনা পরিস্কার করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তাহলে আর কেউ প্রকাশ্যে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশের ক্ষতি করবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এখন প্রশাসন কি পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার অপেক্ষায় আছি।