॥ থানচি প্রতিনিধি ॥
বান্দরবানে থানচি উপজেলা বর্ষা মৌসুমের ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া, ডেঙ্গু, টায়ফয়েট ও জ্বরের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। জনবল ও প্রয়োজনীয় সরজ্ঞাম সংকটে চিকিৎসা সেবা ও মোকাবেলা করার সম্ভব হবেনা এমন আশংঙ্খা করছেন উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। চলতি এপ্রিল, মে, জুন তিন মাসের এর আশংঙ্খা বেশীর বলেন এ তথ্য জানানো হয়েছে কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও এন জিও সংস্থা ব্র্যাক সূত্রে জানা যায়, চলতি এপ্রিল মাসের অন্তবিভাগ (ইনডোর) ভর্তি ও চিকিৎসা সেবা নিয়েছে ম্যালেরিয়া ১৬ জন, ডেঙ্গুতে ২ জন, ডায়রিয়া ৩০ জন, টায়ফয়েট ও সাধারণ জ্বর ২৩ জন। বর্হি বিভাগের গ্রামে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়েছেন ম্যালেরিয়া অর্ধশতাধিক, ডায়রিয়া ৩০ জনের ও বেশী।
এছাড়াও তলপেটে ব্যাথা, ভাইরাস জ্বর, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া, টাইফয়েট, শিশুদের নিমুনিয়াসহ নানান রোগের আক্রান্ত হয়ে উপজেলা ব্যাপী পাহাড়ে বিভিন্ন গ্রামে সকল বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। হাট বাজারে বিভিন্ন ফার্মেন্সী দোকানে ঔষদের জন্য ভির জমাচ্ছে বলে খবরর পাওয়া যাচ্ছে।
আক্রান্ত হওয়া সচেতনতা রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে সু-চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিদিনই বাড়ছে এ রোগের সংখ্যা। উপজেলার স্বল্প সংখ্যক ফার্মেসিগুলোয় প্যারাসিটামল, নাপা, অ্যান্টিবায়োটিক-জাতীয় ওষুধের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ৩১ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মিত হয়। ২০১৭ সালে ৩১ শয্যা থেকে ১৯ শয্যা উন্নিত করে ৫০ শয্যা সম্পন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হিসেবে উদ্মুক্ত ঘোষনা করেন তৎকালীণ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর বীর বাহাদুর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকালের সরেজমিনের গেলে ইনডোরের উপস্থিত সিনিয়র স্টাফ নার্স উসাইমে মারমা বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা হলে ও আলট্রাসোনোগ্রাম, এক্সরে, বায়ো কেমিট্রিষ্ট এনালাইজার যন্ত্রপাতি নেই সুতারাং জটিল রোগীরা রোগ নিরুপনের সুবিধা না থাকায় সর্বদায় বান্দরবানের স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়। ফলে অসহায়, হতদরিদ্র রোগীদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যা কর্মকর্তা পঙ্কশ বড়ুয়া বলেন, অত্র কমপ্লেক্সের ১৩ জন চিকিৎসক স্থলের প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ তিন জন চিকিৎসক রয়েছেন আরএমও ডা: আবদুল্লাহ আল নোমান ব্লাড কেন্সার হয়ে দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, আবাসিক চিকিৎসক ডা: মেহনাজ ফাতেমা তুলি তিনি ও কয়েকদিনের জন্য ছুটিতে বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (প্রশাসনিক) ডা: মো: ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ স্যার একা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও মিডওয়াইফ ৫ জনের মধ্যে একজন ও নেই, ফারমাসিস্ট ১ জন, কেসিয়ার ১ জন, হেড ক্লার্ক ১ জন তাও নেই।
বান্দরবানের থানচি উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের ২৫২টি গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজারো বেশী জনসংখ্যার মধ্যে অধিকাংশ জনগন হতদরিদ্র, গরীব, অসহায় পরিবার। অভ্যন্তরীন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুই ইউনিয়নের পাঁয়ে হাঁটার ও নৌপথে যাতায়াত করতে হয় সবাইকে।
সরেজমিনের পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিতে ব্যস্ত সময়ের সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, দীর্ঘ দিন যাবৎ জনবল ও প্রয়োজনীয় সরজ্ঞাম না থাকায় হত দরিদ্র অসহায় গরীব রোগীদের জেলা সদরের স্থানান্তর (রেফার) করতে হচ্ছে কিন্তু সেটি খুবই দু:ক জনক, আলট্রাসোনোগ্রাম, এক্সরে, বায়ো কেমিট্রিষ্ট এনালাইজার রোগ নিরুপনের যন্ত্রপাতি থাকলে রোগীরা সম্পুর্ন রুপে বঞ্চিত হতো না। ফলে জটিল রোগীদের স্থাননান্তর (রেফার) করার কারনে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি উর্ধতম কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনকে জনবল ও সরজ্ঞাম সংকটের বিষয়ের অবহিত করেছি কিন্তু কোন প্রকার নিরসনের উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অনতিবিলম্ভে শূন্য পদ ও শূন্য সরজ্ঞাম সমূহের পুরনসহ ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া, প্রবনতা অঞ্চলের অসহায় হত দরিদ্রদের চিকিৎসা মোকাবেলার করার লক্ষ্যে আমি সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের প্রতি আকুল আবেদন করছি।