লামায় পাহাড়ে ছোট ছোট ঘর করে চলছে ভূমি দখল, অভিযোগ করেও মিলছেনা প্রতিকার

8

॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥
জোরপূর্বক জায়গা-জমি দখল, বাগানের গাছ কেটে নেয়া, পুকুরের পাড় কেটে চাষের মাছ নিয়ে যাওয়া, ফসলের মাঠ ও সৃজনশীল বাগান দখলের হিড়িক পড়েছে বান্দরবানের লামা উপজেলায়। স্বাধীনতা ২০২৪ খ্যাত গত ৫ আগস্টের পর একটি সংঘবদ্ধ চক্র এইসব অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয়ে ও সংখ্যালঘু নৃ-গোষ্ঠীকে পুঁজি করে উপজেলার সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি, আন্ধারি এলাকায় গত তিন মাস ধরে এইসব কর্মকান্ড চলছে। ভুক্তিভোগীদের অভিযোগ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিহিত করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছেনা।
সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি এলাকার একটি বাগানের ম্যানাজার মো. মনির জানিয়েছেন, গত তিন মাসে তাদের সৃজনশীল শতাধিক একর পাহাড় দখল করেছে নেয়া হয়েছে। পাহাড়ের মাঝে মাঝে ছোট ছোট ঘর করে এইসব পাহাড় ও বাগান দখল করা হয়। এইসব ঘরে কেউ থাকেনা। প্রতিবাদ করলে সংঘবদ্ধ গ্রুপটি হামলা করতে আসে। ভূমিদস্যুরা তাদের জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
টংগঝিরি এলাকায় পাহাড় জমি নিয়ে ১০ একর জায়গার মালিক মো. রফিক ও জসিম উদ্দিন। তারা জানান, ক্রয় সূত্রে হোল্ডিং মূলে এই জায়গার মালিক তারা। টংগঝিরি ত্রিপুরা পাড়ার পাশে তাদের জায়গা অবস্থিত। ওই পাড়ার পাঞ্চেপ্রু ত্রিপুরাসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র আমার জায়গা জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করছে। কোথাও গিয়ে আইনী সহযোগিতা পাচ্ছিনা। আমরা শংকিত যে কোন সময় আমাদের জায়গা দখল করে নিতে পারে ওরা।
সরই ফেয়ারী এগ্রো ফার্ম এর ব্যবস্থাপক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, গত তিনমাসে একে একে আমাদের ১২টি পুকুরের পাড় কেটে কমপক্ষে ৩০ লক্ষ টাকার মাছ নিয়ে গেছে এই চক্রটি। তারা একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে ও নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়কে পুঁজি করে এইসব কাজ করছে। তারা কয়েকশত গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, গয়াল, হাঁস-মুরগী ও বাগানের ফল লুট করে নিয়েছে। প্রায় শতাধিক একর জায়গা দখল করেছে। অসংখ্য সৃজনশীল বাগান কেটে নিয়ে গেছে। আমাদের বাগান বাড়ি ও খামারে ভাংচুর সম্পদ লুট করা হয়েছে। তাদের এইসব আগ্রাসন চলমান রয়েছে। আমরা ভয়ে শঙ্কায় আছি। এইসব নিয়ে লামা থানায় ৪টি অভিযোগ করেছি। কোন প্রতিকার পায়নি।
সরই ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস কোম্পানী বলেন, ৫ আগস্টের পর জায়গা জমি দখলের হিড়িক পড়েছে এলাকায়। কেউ কারো কথা শুনছেনা। জোরালো আইনী পদক্ষেপ না নিয়ে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।
লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ফেয়ারী এগ্রো ফার্ম এর কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। শীঘ্রই এইসব ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এলাকার আইন-শৃঙ্খলা জোরদার করতে পুলিশ কাজ করছে।