॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সাবেক কৃষি কর্মকর্তা কাজল তালুকদার। গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকালে পার্বত্য মন্ত্রণালয়েন সিনিয়র সহকারী সচিব তাসলীমা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়। চেয়ারম্যানসহ ১৫ সদস্যের সমন্বয়ে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নতুন পরিষদ গঠন করা হয়।
নতুন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন এবং চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, সমাজে উন্নয়ন ও দুর্নীতি বিরোধী অবস্থানসহ দায়িত্বকালে পরিষদকে পরিচালনা করার পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফসল হিসেবে আজ আমি এই চেয়ারে বসতে পেরেছি। এজন্য সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আমি চাই রাঙ্গামাটিতে অসম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে, যেখানে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, অতীতে কি হয়েছে সে কথা আমি বলব না, আমি বলবো আমার কথা। আমাকে সবাই পছন্দ ও মনোনীত করেছেন। আমি চেষ্টা করবো শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পর্যটনের উপর বেশি প্রধান্য দিতে। এই খাতগুলোতে উন্নয়ন ছাড়া আমরা সঠিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবো না। এই এলাকার মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত সঠিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি এবং পর্যটনের সুবিধা না পায়, ততক্ষণ রাঙ্গামাটির অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে না।
তিনি দূর্নীতি বিষয়ে আলোকপাত করে বলেন, আমি অনিয়ম ও দুর্নীতিকে ঘৃণা করি এবং যতক্ষণ দায়িত্বে থাকবো, অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর থাকবো। আগের পরিষদের কেউ যদি দুর্নীতিতে জড়িত থাকে এবং তা প্রমাণিত হয়। তবে শাস্তির আওতায় আসা উচিত বলে আমি মনে করি। আমি সকলের সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও কার্যকর পরিষদ পরিচালনা করতে চাই। যাতে করে এলাকার সবাই উপকৃত হয় এবং এলাকার উন্নয়ন ও মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে।
উল্লেখ্য, সরকার পরিবর্তনের তিন মাস পর, অবশেষে অন্তর্বতীকালীন তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করেছে বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার। ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপনে গঠিত পরিষদ বাতিল করে, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ৭ নভেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাসলীমা বেগম স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনে নতুন আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে রাঙ্গামাটিতে অবসরপ্রাপ্ত জেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজল তালুকদারকে চেয়ারম্যান করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্বতীকালীন পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
পরিষদে সদস্য হিসেবে আছেন, বাঘাইছড়ি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ দেবপ্রসাদ দেওয়ান, প্রণতিরঞ্জন খীসা, ইউএনডিপির সাবেক কর্মকর্তা প্রতুল চন্দ্র দেওয়ান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ফুটবলার বরুন বিকাশ দেওয়ান, ক্যসিংমং, সাবেক এনজিও কর্মী নাইউ প্রু মারমা, শিক্ষার্থী ড্যানিয়েল লাল মুুয়ান সাং পাংখোয়া, সাবেক ইউএনডিপি কর্মী রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা, উন্নয়ন কর্মী সাগরিকা রোয়াজা, নানিয়ারচরের দয়াল দাশ, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের নেতা হাবীব আজম, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজ খুরশীদ, লেকার্স পাবলিক স্কুলের সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল বৈশালী চাকমা ও অ্যাডভোকেট লুৎফুন্নেসা ঝিমি।