দীর্ঘ এক মাস পর খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য, সাজেকের পথে পর্যটকদের ঢল

20

॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥
দীর্ঘ এক মাস পর পর্যটকদের ভ্রমন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় স্বস্তি ফিরেছে খাগড়াছড়ির পর্যটন ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের। এতে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) থেকে পর্যটকরা খাগড়াছড়ির সকল পর্যটন স্থান ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোয় ভ্রমণ করতে পারবেন এবং পর্যটকরা সাজেকও যেতে পারবেন। জেলা প্রশাসকের এ ঘোষনায় সাধুবাদ জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায় জড়িত সংশ্লিষ্টরা। এতে করে দীর্ঘ এক মাস পর খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে। এদিকে পর্যটন ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা খাগড়াছড়িতে আগত পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন ছাড়সহ আগত পর্যটকদের সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন।
দীর্ঘ ১ মাস পর আজ থেকে খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের ভ্রমন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় স্বস্তি ফিরেছে খাগড়াছড়ির পর্যটন ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের। সম্প্রতিক সময়ে দেশের সহিংসতা তিন পার্বত্য জেলায়ও ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ী বাঙ্গালী এবং আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংঘাতের কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন পার্বত্য জেলায় ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরবর্তীতে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক হওয়ায় গত ১ নভেম্বর রাঙ্গামাটি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় হলে খাগড়াছড়িতে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) থেকে পর্যটকরা খাগড়াছড়ির সকল পর্যটন স্থানগুলো ভ্রমণ করতে পারবেন জানিয়ে দেয় স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে খাগড়াছড়ির পরিস্থতি স্বাভাবিক হওয়ায় পর্যটকরা সাজেকেও এখন থেকে ভ্রমন করতে পারবেন। এতে করে প্রথম দিন থেকেই সাজেকের পথে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকায় পর্যটকদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠে। সাজেক পরিবহণ মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দিন সকালে ২৫টি পিকআপ ছাড়াও অসংখ্য সিএনজি ও বাইকে করে পর্যটকরা সাজেকের পথে রওনা দেন। ইতোমধ্যে সাজেক ও খাগড়াছড়ির হোটেল ও কটেজগুলোতে শুক্রবার ও শনিবারের জন্য আগাম বুকিং শুরু হয়েছে। অপরদিকে খাগড়াছড়িতে পর্যটকের বিধি নিষেধ তুলে দেয়ায় পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুতের কথা জানিয়েছে স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী, যানবাহন চালক ও স্থানীয়রা।
খাগড়াছড়ির স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী মোঃ সাগড় জানান, দীর্ঘদিন পর্যটন ব্যবসা বন্ধ থাকায় পুরো খাগড়াছড়িতে ৫০ কোটি টাকার উপরে লোকসান হয়েছে এবং খাগড়াছড়ির ইমেজের ক্ষতি বেশী হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পর্যটন কর্পোরেশনের ম্যানেজার উত্তম কুমার মজুমদার জানান, পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিয়েছে খাগড়াছড়ির পর্যটন উদ্যোক্তারা। সরকারি-বেসরকারী পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে খাগড়াছড়ি ও সাজেক ভ্রমন করতে আসা পর্যটকদের আতিথেয়তা দিতে সকল প্রস্থতি গহণ করেছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান পর্যটকদের আগমনের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেলার স্বার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ খাগড়াছড়ি উপ-পরিদর্শক নিশাত রায় জানান, আগের মতই পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সাবক্ষণিক টহল দেয়া হবে। দুর্গম এলাকার পর্যটন কেন্দ্রে গিয়ে কোন সমস্যায় পরলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে এই কর্মকর্তা।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা পাহাড় আর প্রাকৃতিক ঝর্ণার অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমণ পিপাসুরা নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে পারবেন পর্যটন শহর খাগড়াছড়িতে।