শঙ্কা কাটিয়ে রাঙ্গামাটিতে ছুটে আসছে পর্যটকরা, স্বস্থিতে ব্যবসায়ীরা

28

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত প্রত্যাহারের পর শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে আবারও শঙ্কা কাটিয়ে পর্যটকরা ভ্রমণ করতে শুরু করেছেন। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন হওয়ায় এইদিন সকাল থেকে রাঙ্গামাটিতে আশানুরূপ পর্যটকের দেখা মিলেছে। তবে পড়ের সপ্তাহে পর্যটকদের ঢল নামবে বলে আশা করছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
এদিকে সকাল থেকেই রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু ও পলওয়ে পার্কে পর্যটকদের আনাগোনা ছিল। দলে দলে পর্যটকদের ঝুলন্ত সেতু ও পলওয়ে পার্কে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। ঝুলন্ত সেতু দিয়ে হাঁটা-চলার পাশাপাশি অনেকেই কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার করেছেন।
রাঙ্গামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মোহিত পর্যটকরা জানান, নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। অনেকদিন পর রাঙ্গামাটিতে আসতে পেরে তারা খুশি। কারণ রাঙ্গামাটির অপার সৌন্দর্য্য ও কাপ্তাই হ্রদ মানুষকে আকৃষ্ট করে। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদে ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মফিজুর রহমান বলেন, অনেক পর রাঙ্গামাটিতে আসতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। কোন ভয় বা শংকা লাগছে না। নিরাপত্তা নিয়ে তিনি খুশি বলে জানান। তবে পর্যটন এলাকায় নতুন কিছু যোগ করা হলে আরো আনন্দ ভোগ করতে পারতাম বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নোয়াখালী থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক শারমিন আক্তার বলেন, সমতলের চেয়ে পাহাড়ি জেলা সুন্দর। মা-বাবা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে এসেছি। এখানে মুক্ত বাতাসে ঘুরাফেরা করা যায়। পাহাড়ের প্রকৃতি দেখতে অনেক ভালো লাগে। অনেক ভাল লাগছে।
পর্যটন নৌযান ঘাটের ম্যানেজার মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, মাসখানেক পর্যটক আগমন বন্ধ থাকায় তারা আর্থিক ভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ১লা নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় ট্যুরিস্ট বোট মালিক-শ্রমিকরা সকলে খুশি বলে জানান। পর্যটক আসতে শুরু করায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্থি ফিরেছে।
রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রথম দিন হিসেবে আজ বেশ ভালোই পর্যটক সমাগম হয়েছে। সবাই ঝুলন্ত সেতু দেখতে যাচ্ছেন। সেখানে বোট নিয়েও পর্যটকরা কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ করছেন। পর্যটক আগমনের হারটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মামুন নামের এক যুবককে হত্যার পর খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা উপজেলা এবং রাঙ্গামাটি শহরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে এই দুই জেলায় চারজন নিহত এবং বহুজন আহত হয়েছিলো।
আর পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং শান্তি- শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান জেলায় গত ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত একটানা ২৪ দিন পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছিলো স্থানীয় প্রশাসন।
তবে গতকাল বুধবার প্রশাসন ১ নভেম্বর থেকে রাঙ্গামাটি এবং ৫ নভেম্বর থেকে খাগড়াছড়িতে পর্যটকরা বিনা বাধায় ভ্রমণ করতে পারবেন বলে ঘোষণা করেন। তবে বান্দবানের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানানো হয়।
#